top of page

BLOG ARTICLES

Search

আত্মা—মন—পুণর্জন্ম

  • Writer: Maharshi MahaManas
    Maharshi MahaManas
  • Aug 9, 2018
  • 2 min read



সমগ্র মন-ই হলো— আত্মা। আত্মা ব’লে আলাদা কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। অহম বোধ সম্পন্ন এবং মনন ক্ষমতা সম্পন্ন চেতন সত্তাটি আসলে মন-ই। সে পার্থিব দেহ সম্পন্ন মনই হোক আর অপার্থিব দেহ সম্পন্ন মনই হোক, জীব-মনই হোক আর ঈশ্বর-মনই হোক, আসলে সে— মন। আমাদের বর্তমান মনোজগতে কতকটা স্বামী-স্ত্রীর মতই— সক্রিয় মনদুটির একটি হলো— ‘প্রাক মানব-চেতন-মন’ বা অবচেতন মন, আর অপরটি হলো— ‘মানব-চেতন-মন’ বা সচেতন মন। এরা হলো সমগ্র মনের (ক্রমবিকাশমান মনোপদ্মের ) অংশমাত্র। সমগ্র মন হলো— ক্রমবিকাশমান পদ্মের মতো। অস্ফুট চেতন-স্তর থেকে একটু একটু ক’রে ক্রমশ বিকশিত হতে হতে এক সময় পূর্ণচেতন স্তরে পৌঁছে— পূর্ণ বিকাশলাভ করবে সে।


এক একটি চেতন-স্তরের এক একটি নাম, এক এক রূপ, এবং এক এক প্রকারের কার্যকলাপ। সংক্ষেপে চেতনস্তরগুলি হলো- কীট-চেতন স্তর, সরীসৃপ-চেতন স্তর, পশু-চেতন স্তর, আদিম-মানব চেতন স্তর, মানব-চেতন স্তর, মহামানব চেতন স্তর, দেব-চেতন স্তর, মহাদেব-চেতন স্তর, এবং ঈশ্বর-চেতন স্তর। সমস্ত চেতন স্তরগুলি পৃথিবীতে লভ্য নয়। মানব-চেতন স্তরের পরবর্তী স্তরগুলি অপরাপর বিভিন্ন লোকে ক্রমশ বিকশিত হয়ে থাকে। তবে, মানব-চেতন ও মহামানব-চেতন স্তরের মধ্যবর্তী সন্ধি স্তরের ২।৪ জন মানুষকে কখনো কখনো পৃথিবীতে দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে স্বল্প বিকশিত এই মানব-চেতন-মন বা সচেতন মনের যথেষ্ট বিকাশ ঘটলে তবেই পরবর্তী উচ্চ-চেতন (স্তরের) মনের মালিক হতে পারবো আমরা। তারপরেও আরো অনেক পথ পেরতে হবে এই বিকাশপথ ধরে...।


আত্মার পুণর্জন্ম নিয়ে প্রচলিত মতবাদ, অর্থাৎ পরলোকগত আত্মা— পরলোক হতে পৃথিবীতে পুণরায় জন্মগ্রহন করে— এই মতবাদ অনুসারে প্রত্যেক নবজাত মানবশিশুই কোন একসময় পরলোকগত হওয়া কোনো মনুষ্য আত্মার— পরলোক হতে ইহলোকে পুণরাগমন ক’রে— মনুষ্য রূপে পুণর্জন্মলাভ করা এক মানব-অস্তিত্ব!

তাই যদি হয়, তাহলে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারেনা। আর, মনুষ্যেতর অন্য কোনো জীবের আত্মার পক্ষেও মানুষরূপে জন্মগ্রহন করা সম্ভব নয়। কারণ, সচেতন বা মানব-চেতন মনের সামান্য উপস্থিতি বা বিকাশ না ঘটে থাকলে, তার পক্ষে মানব-অস্তিত্ব সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয়। পৃথিবীতে স্বল্প মানব-চেতন বা সচেতন মন সম্পন্ন অন্য কোনো জীবের অস্তিত্ব নেই। বর্তমানে, পৃথিবীতে আদিম মানুষের সংখ্যাও নগন্য। একমাত্র, বিকশিত আদিম মানুষের— যথেষ্ট বিকশিত আত্মার পক্ষেই– আজকের এই মানুষ রূপে পুণর্জন্ম লাভ সম্ভব হতে পারে। অন্য কোনো জীবের পক্ষে তা’ মোটেই সম্ভব নয়।


তাই, যুক্তিসম্মত আধ্যাত্মিক মতবাদ ’মহাবাদ’ —উপরে উল্লেখিত পুণর্জন্মের ধারণাকে সমর্থন করেনা।


পুনশ্চঃ

পুনর্জন্মের প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পুর্বজন্মের ‘কর্মফল’ কথাটা চলে আসে। ‘কর্মফল’ নিয়ে আমার একটি স্বতন্ত্র প্রবন্ধ আছে। এখানে সংক্ষেপে দু’-একটা কথা বলি, ঈশ্বরের রাজ্যে— জাগতিক ব্যবস্থায় আমরা যাকিছু করি— তার জন্য আমরা দায়ী নই। পূর্বনির্ধারিত ভাগ্যক্রমে (ভাগ্য সম্পর্কে স্বতন্ত্র প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য) এখানে সবকিছু ঘটে চলেছে। আমরা যাকিছু করি— তা’ আমরা করতে বাধ্য হই, অর্থাৎ প্রায় ক্রিড়নকের মতোই বাধ্য হয়ে করি। তাই, তার ফলাফলের জন্য আমরা কোনভাবেই দায়ী নই। এখানে আমরা মায় সমস্ত কিছুই পরম্পরাগত ঘটনাস্রোতের ফসল। তবে, ঘটনাক্রমে— বহুকিছু সাপেক্ষে কোন কোন কর্মের ফল আমাদের ভোগ করতে হয়, আবার কোন কোন কর্মের ফল আমরা ভোগ করিনা। সবকিছুর পিছনেই কার্য-কারণ থাকে।

আর যেহেতু, সাধারণভাবে পৃথিবীতে পুণর্জন্ম হয়না, তাই পূর্বজন্মের কর্মফল পরজন্মে ভোগ করার প্রশ্নই আসেনা। আমরা জীবমাত্রই, পিতা-মাতার নিকট হতে বংশানুক্রমে দেহ-মন লাভ করে থাকি। জীব-অস্তিত্বশীল হওয়ার জন্য পরোলোকগত কোন আত্মার অনুপ্রবেশের প্রয়োজনই নেই এখানে। তবে, বর্তমানের মানুষ সংকর জাতির জীব হওয়ার ফলে, আমরা এক একজন এক এক প্রকারের— বিচিত্ররূপী দেহ-মন সম্পন্ন মানুষ। ভাগ্যক্রমে আমরা এক একজন এক এক পরিবেশ— পরিস্থিতিতে, এক এক প্রকার ভাগ্য অনুসারে কর্ম করে চলেছি।



 
 
 

Comments


MahaDharma Samsad

  • Facebook Clean Grey
  • Twitter Clean Grey
  • LinkedIn Clean Grey

© 2023 by MahaDharma Samsad. Proudly created with Wix.com

bottom of page