top of page
যে (ব‍্যক্তি বা বিষয় বা বস্তু) যা নয়, তাকে তা-ই ভেবে নেওয়ার মূলে থাকে অজ্ঞানতা প্রসূত মোহ-অন্ধত্ব। আর, এর থেকেই জন্ম নেয় সুখ-দুঃখ।
শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন

শিক্ষা প্রসঙ্গে কিছু কথা:

আমাদের চারিদিকে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত শিক্ষার বড়ই অভাব। অধিকাংশ মানুষ যে তিমিরে ছিল— এখনো অনেকাংশে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। শুধু বাইরের চাকচিক্য ধারালো ভাবটাই বৃদ্ধি পেয়েছে ভিতরের অন্ধকার তেমন দূর হয়নি কিছুতেই।

প্রকৃত শিক্ষার অভাবে সার্বিক চেতনার বিকাশ ঘটছেনা তেমনভাবে। তবু তারই মধ্যে, কিছু উচ্চ চেতনার মানুষ এই ঘাটতি পুরণের আশায়, প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের এবং প্রকৃত আত্মবিকাশ লাভের আশায়, প্রচলিত ধর্ম এবং, আধ্যাত্মিক শিক্ষার শরণাপন্ন হয়েও হতাশ হয়ে ফিরছে। কারন, সেখানেও মিলছে না প্রকৃত শিক্ষা – প্রকৃত মানুষ গড়ার শিক্ষা।

প্রকৃত শিক্ষা হলো তা-ই, -যা আমাদের যথেষ্ট বিকশিত মানুষ হতে সাহায্য করে, নিজেকে জানতে এবং নিজের বিকাশলাভে সরাসরি সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে। শুধু তাই নয়, নিজের ভিতরকে জানার সাথে সাথে নিজের চারিপাশসহ বহির্জগতকে জানতে সাহায্য করে। প্রকৃতশিক্ষা মানুষকে নিজের কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ এবং কর্তব্য কর্মে উদ্যোগী করে তোলে।

তা-ই হলো প্রকৃত শিক্ষা যা আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন ক’রে তোলে এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্রিয় সহযোগিতা করে থাকে। সেই সাথে আমাদের সুস্থ সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ জীবন লাভে সহায়তা করে, এবং সচেতন মনের বিকাশ ঘটায়। আমাদেরকে কুসংস্কার- অন্ধবিশ্বাস- অজ্ঞানতা, এমনকি মানসিক অসুস্থতা থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। এককথায়, যে শিক্ষা প্রকৃত জ্ঞান তথা চেতনার জন্ম দেয়। সেই হলো প্রকৃত শিক্ষা। আমরা যতই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠি না কেন, অত্যাবশ্যক ভিত্তি গঠনমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে না পারলে, সে সবই হবে— ভিত্তিহীন সৌধ গড়ার মতো।

সেদিন একটি মেয়ের সাথে আলাপ হলো, জানলাম, সে এম. এ. পাশ। কিন্তু কথা বলে বুঝলাম, তার ‘কমন সেন্সের’ বড়ই অভাব। নাগরিকোচিত সচেতনতাও নেই তেমন। এমনকি যে বিষয়টিতে সে ‘মাষ্টার ডিগ্রি’ করেছে, সে বিষয়টিতেও তার জ্ঞান যথেষ্ট নয়। বুঝলাম, ভালো ক’রে না বুঝে গোগ্রাসে গলধঃকরণ করার মতো মুখস্থ ক’রে পরীক্ষার খাতায় উগরে দিয়ে এসেছে। তারপর পেটে আর কিছু নেই।

শিক্ষাব্যবস্থা আর শিক্ষার্থীদের অবস্থা দেখে সত্যই বিষন্ন হয়ে পড়ি। আবার যখন দেখি, এই রকম কোনো একটি ছেলে বা মেয়ে শিক্ষক/শিক্ষিকার পদে আসীন হয়েছে, তখন আর দুঃখ রাখার জায়গা থাকেনা।

শিক্ষা প্রসঙ্গে শিক্ষকের কথা এসেই যায়, অন্নসংস্থান বা অর্থলাভের জন্য আজকাল অনেকেই অনেক পেশা বেছে নিচ্ছে। কিন্তু কেউ যদি ঐ কারণটির বাইরে শুধু নিজের যোগ্যতা ও প্রবণতার ভিত্তিতে কোনো কর্মে নিযুক্ত হয় বা হতে চায়, তখন সেটাই হয় তার উপযুক্ত কর্ম অথবা সেই কর্মের যোগ্য কর্মী হয় সে।

আনেক শিল্পী-কারিগর প্রভৃতির মতো দেখা যায়, কেউ কেউ যেন শিক্ষক হয়েই জন্মায়। কিন্তু সঠিক বিকাশ ও প্রকাশের সুযোগ না পাওয়ায়, আনেকের পক্ষেই আর শিক্ষক হয়ে ওঠা সম্ভব হয়না।

আবার অনেক শিক্ষককেই দেখা যায়, যাদের শিক্ষক হিসেবে মেনে নিতে মন চায়না, তবু বাধ্য হয়ে তাদের কাছেই শিক্ষা গ্রহন করতে হয় আমাদের। অনেক শিক্ষককেই দেখা যাবে, শিক্ষণীয় বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করতে অক্ষম, অথবা ইচ্ছার অভাব। বিষয়টিকে বিভিন্ন শিক্ষার্থীর গ্রহনশক্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাঞ্জল ভাবে বোঝানোর ক্ষমতা নেই অনেকের, তবু তারাই আমাদের শিক্ষক।

হিংসা-বিদ্বেষ ক্রোধ এবং বিভিন্ন অমানবিক গুণে পরিপূর্ণ, হীনস্বার্থান্বেষী কোনো মানুষ অথবা অসুস্থ মনের কোনো মানুষ যদি আমাদের শিক্ষক হয়, তাহলে আমরা কিরূপ শিক্ষা লাভ করবো – তা সহজেই অনুমেয়। শুধু ‘একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন’ দেখে শিক্ষক নিয়োগ করলে এই দশা তো হবেই।

মনেরেখো, শিক্ষাগ্রহন কালে শিক্ষণীয় বিষয়টি ছাড়াও, আমাদের অজ্ঞাতে আমরা শিক্ষকের দোষ-গুণ প্রভৃতিও কম-বেশি গ্রহন করে থাকি।

পরিশেষে বলি, শিশুশ্রেণী থেকেই অন্যান্য পাঠক্রমের পাশাপাশি ক্রমশ ধাপে ধাপে সঠিকভাবে আত্মবিকাশমূলক বুনিয়াদী শিক্ষা (থিওরিটিক্যাল ও প্র্যাকটিক্যাল) দান না করা হলে, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি কখনোই সম্ভব হবেনা।

এই উদ্দেশ্যেই, সুদীর্ঘ কালের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় একটু একটু করে গড়ে উঠেছে— ‘মহামনন’ আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রম। www.mahamanan.wix.com/education

‘মহামনন’ আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রম

আত্মবিকাশ তথা মনোবিকাশ ঘটানোর সাথে সাথে সর্বাঙ্গীন সুস্থতা লাভই হলো এই শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন চিকিৎসা বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, অধ্যাত্ম মনোবিজ্ঞান, যোগবিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিজ্ঞানের সমন্বয়ে এবং ‘মহাবাদ’ গ্রন্থের প্রকৃষ্ট জ্ঞানের সাহায্যে এই অসাধারণ শিক্ষাক্রম গ’ড়ে উঠেছে— বহুকালের নিরলস ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও গবেষনার ফলে--। নিজেকে জানা—নিজের শরীর ও মনকে জানা, নিজের চারিপাশ সহ মানুষকে চেনা, নিজের প্রকৃত অবস্থান সহ জগৎ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান লাভ, নিজের উপর নিয়ন্ত্রন লাভ, জগতকে আরো বেশি উপভোগ করার জন্য নিজেকে যোগ্য—সমর্থ ক’রে তোলা— এই রকম আরো অনেক বিষয় নিয়েই এই শিক্ষাক্রম।

নিষ্ঠার সাথে শিক্ষা ও অনুশীলন করতে থাকলে— আস্তে আস্তে আপনার ভিতরে এক উন্নত—বিকশিত নতুন মানুষ জন্ম নেবে। যা দেখে আর সবার মতো আপনিও বিস্ময়ে মুগ্ধ হয়ে যাবেন। নিজের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়ে অপার আনন্দের আধার হয়ে উঠবেন আপনি। আপনার চারিপাশে থাকা সবাই এই আনন্দের সংস্পর্শে এসে তারাও আনন্দ লাভ করবে! বিশদভাবে জানতে, এই ওয়েবসাইট দেখুন- http://www.mahamanan.wix.com/university

শিক্ষা-ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন — ২

 

 

আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রম : বিকশিত মানুষ বলতে কি বোঝায়— মনের বিকাশ কিভাবে সম্ভব!

বিকশিত মানুষ বলতে বোঝায়— বিকশিত মনের মানুষ। মূলগত জ্ঞান ও যথেষ্ট চেতনা সহ মানবিক গুণে সমৃদ্ধ সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ- মুক্তমনের প্রগতিশীল মানুষ।

আমাদের মন অনেকাংশে তার অন্তরে নিহিত সংস্কার বা ‘প্রোগ্রাম' দ্বারা চালিত হয়। তাই প্রথমেই মনের মধ্যে আত্মবিকাশ লাভের জন্য ব্যাকুলতাসহ— সত্য ও জ্ঞান লাভের প্রবল আকাঙ্খর ‘প্রোগ্রাম’ রূপ বীজ বপন করতে হবে। এটা নিজেই নিজের মধ্যে বপন করা যায়, অর্থাৎ নিজেই নিজেকে ‘প্রোগ্রামড’ করে তোলা যায়। আবার অপর কারো সাহায্যেও প্রোগ্ৰামড’ হওয়া যায়। উপযুক্ত শিক্ষা ও পরিবেশ এই বাসনা বৃদ্ধির সহায়ক হয়। এর জন্য প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার এবং প্রকৃত আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রমের প্রচলন একান্ত প্রয়োজন৷

জ্ঞান ও সত্য লাভের তীব্র পিপাসা থাকাই হলো— দ্রুত বিকাশলাভের প্রথম সোপান৷ এই জ্ঞান ও সত্য লাভের জন্য হতে হবে যুক্তিবাদী- বিজ্ঞানমনষ্ক- সত্যপ্রিয় মানুষ। তাই, এই ‘প্রোগ্রাম'ও মনের মধ্যে থাকতে হবে। তা’ না হলে, ব্যক্তি— মিথ্যা বা কাল্পনিক বিষয়কেই জ্ঞান ও সত্য ভেবে নিয়ে তা’ গ্রহন করেই তৃপ্তি লাভ করবে। মনকে যুক্তিবাদী— বিজ্ঞানমনষ্ক করে তোলার পাঠই হলো দ্বিতীয় সোপান৷ এই অত্যাবশ্যক কাজটিও প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্পাদন করতে হবে। কে কতটা যুক্তিবাদী, তার পরীক্ষা নিয়ে সফল শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করতে হবে।

এর পরবর্তী সোপান গুলিতে- আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রমের পাঠ ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব৷ মনের ক্ষমতা বৃদ্ধির পাঠ ও অনুশীলনও এই শিক্ষাক্রমেরই অন্তর্গত৷ মহর্ষি মহামানস রচিত ‘মহা আত্মবিকাশ যোগ’’ বা ‘মহামনন' -এক অসাধারণ অত্যাবশ্যক আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রম৷ এই সহজ-সরল এবং অত্যন্ত ফলপ্রদ শিক্ষাপদ্ধতি একজন আগ্রহী নিষ্ঠাযুক্ত মানুষের মনোবিকাশ ঘটিয়ে তার জীবনে অভূতপূর্ব বিস্ময়কর শুভপরিবর্তন আনতে সক্ষম৷ (Google Search= MahaManan)

অনেকেই, মানুষ হওয়া বা বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠা বলতে, -শুধু নীতি-রীতিজ্ঞ, আদর্শবান বিবেকবান হওয়া, কর্মপটু ও কৌশলী হওয়া, মানবিক কর্তব্য কর্ম ও আত্মত্যাগ করাকেই বুঝে থাকেন৷ কিন্তু এই নীতি আদর্শ- বিবেক প্রভৃতি যাতে অন্ধআবেগ- অন্ধবিশ্বাসের দ্বারা ভুল পথে চালিত না হয়, অথবা বিপথগামী না হয়, তার জন্য শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা লাভের সাথেসাথে মনকে সুশিক্ষিত করে তোলা প্রয়োজন৷ দয়া-মায়া- ক্ষমা- প্রেম প্রভৃতি মানব মনের সুকুমার বৃত্তি গুলির আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। সুস্থ মানুষের মধ্যে এগুলি স্বতঃই প্রস্ফুটিত হয়ে থাকে। তাই আত্মবিকাশ শিক্ষালাভের সাথেসাথে সর্বাঙ্গীন সুস্থতা লাভের চেষ্টাও করতে হবে আমাদের। তার জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের নবনব আবিষ্কারের সাহায্য সহ উন্নত বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গুলির সাহায্যও গ্রহন করতে হবে। (www.mpath8.wix.com/medicine)।

সঠিক আত্মবিকাশ মূলক শিক্ষার অভাবে এবং প্রকৃত সুস্থতার অভাবেই আজ মানুষের ও দেশের এই দূরাবস্থা৷ আমরা এর আমূল পরিবর্তন চাই। আমরা চাই সুস্থ শিক্ষিত-প্রকৃত জ্ঞানী মানুষে সমৃদ্ধ হয়ে উঠুক আমাদের দেশ৷

প্রথমে, আত্মবিকাশ লাভে আগ্রহী মানুষদের নিয়েই শুরু করতে হবে- এই কার্যক্রম। তারপর, তাদের উন্নতি দেখে, তাদের লাভবান হতে দেখে--, পরবর্তী স্তরের মানুষ যারা স্বল্প ইচ্ছুক ছিল, তাদের আকাঙ্খও জাগ্রত হয়ে উঠবে, এবং তারাও এগিয়ে আসবে এর সুফল লাভের আশায়। এই ভাবেই ক্রমশ এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে সর্বসাধারণের মধ্যে। ‘যুক্তিবাদী মন', ‘বিকাশমান মন’, ‘আলোকপ্রাপ্ত মন' প্রভৃতি সরকার প্রদত্ত সার্টিফিকেট গুলি সমাজে এবং কর্মক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে সমাদৃত হলেই, সাধারণ মানুষ আত্মবিকাশ শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠবে।

www.mahamanan.wix.com/education

গণতন্ত্র রূপী রাজতন্ত্র~ ধর্মতন্ত্র আর বৈশ‍্যতন্ত্রের সঙ্গে যোগসাজশে চালাচ্ছে দেশ।
আমরা বুঝেও অবুঝের মতো আনন্দে মেতে আছি বেশ!
mon.jpg
jana.jpg
নতুন ভারত গড়ে তুলতে
আপনারা এগিয়ে আসুন। 
নিষ্ক্রিয় সমর্থন নয়, চাই সক্রিয় অংশগ্রহণ।

।। মানব ধর্মই মহাধর্ম ।।
শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন — ৩

মানুষ গড়ার কর্মশালা

সুসন্তান উৎপাদনের মধ্যেই দেশ তথা মানবজাতির উজ্বল- উৎকৃষ্টতর ভবিষ্যত নিহিত রয়েছে। মানবেতর জীবদের মতো কামতাড়িত হয়ে, জ্ঞান-শিক্ষা ও প্রস্তুতি বিহিন— সুপরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রণ বিহিন সন্তান উৎপাদন দ্বারা দু-একটি ব্যতীক্রমী ঘটনা ছাড়া, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সুসন্তান উৎপাদন সম্ভব নয়।

বীজ বা অঙ্কুরেই যদি গলদ থেকে যায়, সেক্ষেত্রে যতই যত্ন- পরিচর্যা সহ বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করা হোক না কেন, যথেষ্ট সাফল্য আসতে পারেনা৷ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে অনেক সময় সবটাই পন্ডশ্রম হয়ে যেতে পারে।

সুসন্তান বলতে এখানে, শুধু মাতা-পিতার অনুগত এবং তাদের পছন্দমতো বিভিন্ন গুণের অধিকারিই বোঝানো হচ্ছেনা, সুসন্তান বলতে আমরা বুঝি— সব দিক থেকেই ভালো সন্তান। সুস্থ শরীর সুস্থ মন সহ উচ্চ চেতনা সম্পন্ন এবং মানবিক গুণে সমৃদ্ধ মানব সন্তান।

মানুষ গড়ার কাজটি শুরু করতে হবে- একেবারে গোড়া থেকে। বীজ থেকেই নয়, বীজ উৎপাদিত হয় যে গাছে, সেই গাছ থেকে শুরু করতে হবে এই কাজ।

এর প্রথম পদক্ষেপ হলো— ভাবী পিতা-মাতাকে সুস্থ-শিক্ষিত ও যোগ্য করে তোলা। শিক্ষার প্রথমাংশ অবশ্যই আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রম। আত্মবিকাশ শিক্ষা ও অনুশীলন পর্বের পরবর্তীতে সুসন্তান উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা, যথা— যৌন বিজ্ঞান, প্রজনন বিজ্ঞান, স্বাস্থ্যবিধি সহ মনোবিজ্ঞান ও অধ্যাত্ম-মনোবিজ্ঞানের শিক্ষা গ্রহন এবং পূর্ব প্রস্তুতির আয়োজন ও অনুশীলন কর্তব্য।

সর্বাগ্রে প্রয়োজন— সর্বাঙ্গীন সুস্থতা সহ মানসিক প্রস্তুতি৷ ভাবী পিতা-মাতার ভাবের ও চাহিদার মধ্যে ঐক্য স্থাপিত হতে হবে প্রথমেই। পরস্পরের মধ্যে প্রেম শ্রদ্ধা এবং উচ্চ মানবিকতার এক অনির্বচনীয় দিব্য ভাবমন্ডল সৃষ্টি হওয়া আবশ্যক। এর ব্যত্যয় হলে, তাদের দ্বারা প্রকৃত সুসন্তান উৎপাদন সম্ভব হবেনা।

নিজেদেরকে যোগ্য করে তুলতে হবে। গর্ভাধান— গর্ভধারণ, প্রসব এবং সন্তান পালনের প্রতিটি ধাপেই যুক্তিবিজ্ঞান এবং অধ্যাত্ম-বিজ্ঞানের (ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা নয়) আলোয় আলোকীত হয়ে সজাগ সচেতন থাকতে হবে। এখানে অলসতার কোনো স্থান নেই, কোনো রকম অন্ধবিশ্বাস- কুসংস্কার- অজ্ঞান-অন্ধত্বকে অনুপ্রবেশের সুযোগ দিলে হবেনা।

পরবর্তী কার্যক্রম হলো – সন্তানকে বুনিয়াদি শিক্ষা সহ প্রয়োজনীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রমের সহায়তা ছাড়াও, এখানে পিতা-মাতাকে সাধারণ মনস্তত্ব সহ শিশু-মনস্তত্ব- সন্তানের মনস্তত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে, এবং প্রয়োজন মতো যথাযোগ্য ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে আত্মবিকাশ কেন্দ্রের মনোবিদ-দের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে।

।। মিথ্যার আঁতুরঘর ।।

অনেক বাড়িতেই, বাচ্চাদেরকে মিথ্যা কথা--- মিথ্যাচার শেখানো হয়, হিংসা-বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ক'রে তোলা সহ নানাভাবে তাদের মনোদুষণ ঘটানো হয়। প্রধানতঃ এর পিছনে থাকে তাদের বাবা-মা। এছাড়া বাড়ির অন‍্যান‍্য সদস্যরাও অনেক সময় এর জন্য দায়ী থাকে।

পরবর্তীতে এর কুফল শুধু তাদের পরিবারকেই ভোগ করতে হয়, তা-ই নয়, গোটা সমাজকেই তা' ভোগ করতে হয়।

'বিকাশ' কথাটা এখন খুবই শোনা যায়। কিন্তু সব বিকাশের মূলে আছে যে মনোবিকাশ, তার কথা কেউ ভাবেনা। তাই কোনো বিকাশই ফলপ্রসূ হয়না।
bikas.jpg

আমাদের দর্শনে মনোবিকাশের বেশ কয়েকটি স্তর বা পর্ব রয়েছে। আমরা ধাপে ধাপে, এক এক করে এই স্তর গুলোতে উত্তীর্ণ হচ্ছি।

বর্তমানে মানব-চেতন স্তরের প্রথমাংশে অবস্থান করছি আমরা। মানব চেতন স্তরের বিশেষত্ব হলো যুক্তি-বিচার।

পরবর্তী স্তরে উত্তীর্ণ হলে, তখন আমাদের মধ্যে কিছু অতিরিক্ত ক্ষমতা--- অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার বিকাশ ঘটবে।

গন্তব্যে পৌঁছনোর পূর্বে, তার পরেও বেশ কয়েকটি স্তর পার হতে হবে আমাদের।

এখন, 'গাছে না উঠেই এক কাঁদি' লাভের আশায় স্বপ্ন দেখে দিন কাটালে, গাছে ওঠাই হবেনা। লাভও হবেনা কিছুই। শুধুই হাহুতাশ করে মরতে হবে আমাদের।

প্রচলিত ধর্মের প্রলোভনে মেতে উঠে আমরা এই কাণ্ডটাই করে চলেছি। বর্তমানের কর্তব্য কর্মকে উপেক্ষা করে স্বপ্নের ব‍্যাপারীর প্রলোভনের ফাঁদে পড়েছি আমরা।

আগের কাজ আগে না করার ফলে, আমাদের আজ এই দুর্দশা। তা নাহলে, এতদিনে আমরা আরো অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারতাম। আমাদের বিকাশ থমকে রয়েছে এইসব ধর্ম নামের অধর্মের কারণে।

darshan.jpg

যার জন্ম নেই--- শুরু নেই, তার মৃত্যু নেই--- ধ্বংস বা শেষও নেই। এমতাবস্থায়, তার স্রষ্টা থাকতে পারে না। তার অস্তিত্ব থাকলেও তা' হবে শূন‍্যাস্তিত্ব। পরম শূন্য।

আবার কোনো অস্তিত্ব, বিশেষতঃ চেতন অস্তিত্ব--- সবদিক থেকে পূর্ণ হতে পারে না। পূর্ণতা হলো অচলাবস্থা। পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় অবস্থা--- স্থিতাবস্থা। তার থেকে কখনো কোনো সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। সেই অবস্থায় কোনো চাহিদা থাকতে পারেনা। পূর্ণ চেতনা মানেও অচেতন অবস্থা।

এই পর্যন্ত বর্তমান বিজ্ঞানের সাথে আমাদের মত বা দর্শন (মহাবাদ) -এর সাথে অনেকাংশে মিল রয়েছে। মিল রয়েছে--- মহাবিশ্বের জন্ম মূহুর্তে ঘটা মহাবিস্ফোরণ (তীব্র গতিতে প্রসারণ) কাণ্ডের সাথেও।

তবে, যুক্তিসঙ্গত ভাবেই, আমাদের দর্শন বলে, চেতনা থেকেই জীব চেতনা লাভ করেছে। শূন্য থেকে কিছু সৃষ্টি হয়নি। আর, আমাদের 'মন' সফ্টওয়্যারের পিছনেও রয়েছে, সেই সফ্টওয়্যারের নির্মাতা। এই সফ্টওয়্যারে নথিভুক্ত প্রোগ্রামিং রূপ নির্দেশের পিছনে রয়েছে কোনো একজন প্রোগ্রামার।

আমাদের অধ‍্যাত্ম বিজ্ঞান এবং তার দর্শনের সঙ্গে তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানের এখানেই রয়েছে অমিল। প্রসঙ্গত, ধর্মীয় আধ‍্যাত্মিকতার বিশুদ্ধ বা যুক্তিসম্মত আধ‍্যাত্মিকতাকে গুলিয়ে ফেললে হবেনা। যে ভুলটা করে থাকেন অন্ধ বিজ্ঞান সমর্থকগণ।

আমাদের দর্শনে শুধু বিশ্ব-ই নয়, আছে বিশ্বাত্মা-ও। আমাদের দর্শন বিজ্ঞানের মতোই কখনো শেষ কথা বলেনা। বলেনা আমরা সব জানি। বলেনা আমরা যা বলছি, তা-ই সম্পূর্ণ সত্য। কিন্তু অন্ধ বিজ্ঞান ভক্তদের কাছে শেষ কথা শোনা যায়। কখনো কখনো তারা বিজ্ঞানের ঊর্ধ্বে উঠে যায়।

আমাদের সৃষ্টিতত্ত্ববাদকে জানতে আগ্রহী হলে, নিম্নোক্ত এই প্রবন্ধটি পড়ুন---

https://www.facebook.com/notes/%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%B8/%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A6%B8%E0%A7%83%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%9A%E0%A6%A8/208121156671823/?hc_location=ufi

এই নেতা দুর্নীতিগ্রস্ত, ঐ দল দুর্নীতিগ্রস্ত বলে, আমরা চিৎকার চেঁঁচামেচি করছি। আসল সমস্যা কিন্তু আঁড়ালেই থেকে যাচ্ছে। ফলতঃ সমাধান হচ্ছে না কখনোই, অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে না আদপেই।

আমরা একবারও ভেবে দেখিনা, ওইসব মানুষগুলো তো আমাদের মধ্যে থেকেই উঠে এসেছে। ওরা আমাদেরই তো কারো না কারো ভাই বা বোন। অন্য গ্রহ থেকে তো আর আসেনি!

যতদিন না মানুষের সার্বিকভাবে বিকাশ অর্থাৎ মনোবিকাশ ঘটছে, ততদিন শুভ পরিবর্তনের কোনো আশা নেই। বরং দিনকে দিন ক্রমশ আরো খারাপের দিকে এগিয়ে যাবো আমরা।

এখনো সময় আছে, অনতিবিলম্বে 'মহাধর্ম' প্রদর্শিত মানব বিকাশের পথে এগিয়ে গেলে, তবেই শেষ রক্ষা সম্ভব হবে।

atma.jpg
123.jpg

MahaDharma Samsad

  • Facebook Clean Grey
  • Twitter Clean Grey
  • LinkedIn Clean Grey

© 2023 by MahaDharma Samsad. Proudly created with Wix.com

bottom of page