top of page
 "মানুষ ক্রমবিকাশের মধ্য দিয়ে একসময় যখন ঈশ্বরের চেতন স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে, একমাত্র তখনই সে ঈশ্বরের সাথে মিলিত হবে বা হতে পারবে। 

আত্মবিকাশের সাধনা ছাড়া, আর কোনও সাধনা বা আরাধনার দ্বারাই ঈশ্বরের সাথে মিলিত হওয়া সম্ভব নয়।

আর পরমাত্মার সাথে সবাই মিলিত হবে, তখনই যখন সৃষ্টি লয় হয়ে যাবে।"
                                                                    ~ মহর্ষি মহামানস

 

মানব আসলে ধর্ম কি—

 

কর্ম ও ভোগের মধ্য দিয়ে— জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভের দ্বারা ক্রমশ মনোবিকাশ তথা চেতনা-বিকাশের পথে এগিয়ে চলাই মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম— মৌলিক ধর্ম এবং অন্যতম প্রধান ধর্ম। আর, এ-ই হলো মানব ধর্ম।

 

আমরা সবাই এই একই পথের পথিক— ক্রমবিকাশমান চেতনার পথে। তবে, কেউ চলেছে জ্ঞাতে, আর কেউ অজ্ঞাতে। কেউ পিছিয়ে— আর কেউ এগিয়ে। কেউ অতি ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছে, আর কেউ দ্রুত গতিতে। কেউ চেতন-আলোকবিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন পথে অজ্ঞান-অন্ধত্বের কারণে হোঁচট খেতে খেতে, অত্যন্ত দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা ও অসুস্থতার মধ্য দিয়ে এই পথ অতিক্রম ক’রে চলেছে, আর কেউ চেতন-আলোকে উজ্বল পথে— স্বচ্ছন্দে— জ্ঞানানন্দে স্ফূর্তিতে পূর্ণ-বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে এই একই পথ ধরে। কেউ মানবধর্ম সম্পর্কেই সজাগ নয়, ওয়াকিবহাল নয়, আর কেউ সজাগ-সচেতনভাবে মানবধর্ম পালন ক’রে চলেছে।

 

একটাই জগত, পথও একটাই, শুধু চেতনার পার্থক্যের জন্য এক একজনের এক এক দশা, এবং এই পথ ও জগত— এক একজনের কাছে এক এক প্রকার উপলব্ধ হয়। শুধু তা-ই নয়, জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতার কারণে অনেকে এই পথ—এই জগতকেই দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনাময় নরক ক’রে তোলে।

 

এরজন্য অনেকাংই দায়ী স্বার্থান্বেষীদের দ্বারা পরিচালিত অন্ধ-বিশ্বাস ভিত্তিক প্রচলিত ধর্ম। ধর্ম--- যাকে ধারণ ও পালন করে আমাদের মনোবিকাশ বা মানব-বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা, উল্টে সেই ধর্মই যদি আমাদের বিপথগামী--- নিম্নগামী করে তোলে, তো সেই মিথ‍্যার বেসাতিকে কি ধর্ম বলা যাবে?

 

এই অজ্ঞান-অন্ধত্বজাত অশান্তি থেকে মুক্ত হয়ে স্বচ্ছন্দে সানন্দে এগিয়ে যেতে চাইলে, জ্ঞান ও চেতনা-বিকাশের পথে অগ্রসর হতে হবে আমাদের মানব ধর্ম ভিত্তিক আত্মবিকাশ ধর্ম— মহাধর্মের পথ ধরে।

 

এই প্রসঙ্গে বলি, আমাদের মধ্যে দুটি (প্রায়) বিপরিতমুখী বল-রূপ স্বভাব-ধর্ম কাজ করছে। একটি হলো— আত্ম-বিকাশের তাড়না, যা আমাদেরকে পূর্ণ-বিকাশ লাভের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে, এবং সেইসাথে অন্যান্যদের থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন ক’রে— দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আর, অপরটি হলো— একত্বের টান, যা আমাদেরকে পরস্পর বেঁধে রেখেছে— একত্র ক’রে রেখেছে।

 

সমস্ত মহাবিশ্ব জুড়েই এই কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করা যাবে। একদিকে মহাবিশ্ব ক্রমশই বিস্ফারিত ও প্রস্ফূটিত হয়ে চলেছে, আবার, একের সাথে অপরকে বেঁধে রেখেছে— টেনে ধরে রেখেছে মহাকর্ষ-অভিকর্ষের মতো টান। আসলে, আদিতে সব বা সবাই তো একই ছিলো, সেই এক থেকে বহু হলেও, নাড়ির টান রয়ে গেছে কোষে কোষে— অনু-পরমানুতে।

 

এখন, অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে আলাদা করে মানব ধর্ম ভিত্তিক এই 'মহাধর্ম' গ্রহণ ও অনুশীলন করার প্রয়োজন কী। 

 

প্রয়োজন এই জন্য---, আমরা হাজার হাজার বছর পেরিয়ে এসেও, এখনো আমাদের যথেষ্ট মনোবিকাশ ঘটতে পারেনি। আমরা আজও যে তিমির সেই তিমিরেই পড়ে আছি। আমাদের চেতনা বিকাশের ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় প্রতিবন্ধকদের চিহ্নিত করতে হবে প্রথমে। এরা হলো--- প্রচলিত ধর্ম, রাজতন্ত্র (বর্তমানে রাজনীতি), আর বৈশ‍্যতন্ত্র (ব‍্যবসায়ীরা)। এরা চিরকালই আমাদেরকে এদের প্রয়োজনানুসারে মুর্খ বানিয়ে রাখতে সদাতৎপর। মানুষের মনোবিকাশ এদের কাম‍্য নয়। মানুষ বেশি সচেতন হয়ে উঠলে এদের সর্বনাশ। এদের কারসাজিতেই, আজ আমাদের যতটা মনোবিকাশ ঘটার কথা, তা' ঘটা সম্ভব হয়নি।

 

মহাধর্ম হলো একটি অতি উৎকৃষ্ট বিশেষ (প্র‍্যাকটিকাল ও থিওরিটিক‍্যাল) শিক্ষা ব‍্যবস্থা। যার দ্বারা বিভিন্ন প্রতিকূলতা দূর করে দ্রুত মনোবিকাশ ঘটানো সম্ভব। মানুষকে সুস্থ ও সচেতন করে তোলা এবং পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে আমাদেরকে এগিয়ে দেওয়াই মহাধর্ম -এর কাজ। যেটা প্রচলিত শিক্ষা ব‍্যবস্থা অথবা প্রচলিত ধর্মের দ্বারা কখনোই সম্ভব নয়। আশা করছি, মহাধর্ম আসলে কি, এবং এর কি উদ্দেশ্য, আপনাদেরকে মোটামুটি বোঝাতে পেরেছি।

 

মানবধর্ম-ই মহাধর্ম

 

মানব ধর্ম— হলো মানুষের প্রকৃত ধর্ম— আদি ধর্ম। আত্ম-বিকাশের ধর্ম। আমরা সেই মানবধর্মকে ভুলে গিয়ে, নানারূপ ধর্ম ও অধর্ম নিয়ে অজ্ঞান-অন্ধের মতো মোহাচ্ছন্ন হয়ে মেতে আছি। চারিদিকে একটু সচেতন দৃষ্টিতে তাকালেই দেখা যাবে— দিনকে দিন ক্রমশ ভয়ানক পরিণতীর দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা। আজকের এই ঘোর সঙ্কটকালে— এই সর্বনাশা করুণ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে, অবিলম্বে মানব ধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত ক’রে, মানব ধর্ম অনুশীলন করতে হবে আমাদের।

 

কেউ কেউ মনে করেন, শুধু সৎ ও সহৃদয় হয়ে ওঠাই ‘মানবধর্ম’। কিন্তু মানবধর্ম মানে শুধু সৎ ও সহৃদয় হয়ে ওঠাই নয়, মানবধর্ম হলো পূর্ণ বিকশিত মনের মানুষ হয়ে ওঠার জন্য অবশ্য পালনীয় ধর্ম। একজন বিকশিত মানুষ সতঃস্ফূর্তভাবেই সৎ ও হৃদয়বান হয়ে থাকেন।

 

মানবধর্ম অনুশীলনের মধ্যদিয়েই প্রকৃত মানব-বিকাশ এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। মানবজীবনে এক শুভ পরিবর্তন আসছে— মহাধর্ম-এর পথ ধরে।

 

প্রতিদিন সারা পৃথিবী জুড়ে অত্যন্ত মর্মাহতকর মনুষ্যকৃত যে সমস্ত ঘটনা ঘটে চলেছে, এবং মানুষের যে বিকৃত—বিকারগ্রস্ত—উন্মাদপ্রায় রূপ আমরা অসহায়ের মতো প্রত্যক্ষ ক’রে চলেছি, ধর্ম—রাজনীতি—প্রশাসন প্রভৃতি প্রচলিত কোনো ব্যবস্থা/ সিস্টেম-ই যে তার প্রতিকারে সক্ষম নয় তা’ আমরা খুব ভালভাবেই বুঝতে পারছি।

 

এই ঘোর সঙ্কটে, আগামী সর্বনাশা পরিণতি থেকে আমাদেরকে রক্ষা করতে— মহর্ষি মহামানস একমাত্র সমাধানের পথ দেখিয়েছেন। এখনও সময় আছে, আমরা যদি এখনও সেই পথ অবলম্বন ক’রে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলেই শেষ রক্ষা হবে।

 

মহাধর্ম হলো— মানবধর্ম ভিত্তিক অন্ধ-বিশ্বাসমুক্ত মানব-বিকাশমূলক অধ্যাত্মিক-বিজ্ঞান অনুসারী যুগোপযোগী ধর্ম। মহাধর্ম হল— এ’কালের মহা বৈপ্লবিক উত্তাল তরঙ্গ— প্রকৃত মানব বিকাশের জন্য। এ’হলো অত্যুৎকৃষ্ট (সুস্থ—শান্তিপূর্ণ ও যথেষ্ট বিকশিত) জীবন লাভের শ্রেষ্ঠ পথ। মহাধর্ম গ্রহন করতে, এবং দিকে দিকে সংগঠন গড়ে তুলতে, মুক্তমনের সত্যপ্রেমী যুক্তিবাদী আত্ম-বিকাশকামী জ্ঞানপথের উদ্যোগী মানুষদের আহ্বান জানাই।

 

চতুর্দিকে মানবকেন্দ্রিক যত অশান্তি, যত সমস্যা ও সঙ্কট ক্রমশ ভয়ানক রূপ ধারণ করতে চলেছে, তার অধিকাংশেরই মূল কারণ হলো— জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতা এবং শরীর ও মনের অসুস্থতা। আর, এর একমাত্র সমাধান হলো— সার্বিকভাবে 'মহাধর্ম' অনুশীলন।

 

শরীর ও মনের সুস্থতাসহ মনোবিকাশ এবং সার্বিক উন্নতি লাভের জন্য ‘মহাধর্ম' গ্রহন করুন, এবং আত্ম-বিকাশ-যোগ অনুশীলন করুন। পূর্বের ধর্ম ত্যাগ না করেও মানব ধর্ম— ‘মহাধর্ম গ্রহণ করা যাবে। এই ধর্ম প্রচলিত ধর্মের মতো নয়। মানুষকে সচেতন ও সুস্থ করে তোলাই এই ধর্মের মূল উদ্দেশ্য।

 

মানবধর্ম অনুশীলনের মধ্যদিয়েই প্রকৃত মানব-বিকাশ এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। মানবজীবনে এক শুভ পরিবর্তন আসছে— মহাধর্ম-এর পথ ধরে।

 

মানব ধর্ম দুই প্রকারের: এক, মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম। নেচরাল ফাংশন অফ হিউম্যান।

দুই, মানুষ গড়ার ধর্ম। এ'হলো একটা আরোপিত ব‍্যবস্থা বা সিস্টেম, যার দ্বারা প্রকৃত বিকশিত মানুষ গড়ে তোলা যায়। যা মানুষের মৌলিক ধর্ম সম্পর্কে মানুষকে সজাগ-সচেতন করে তোলা এবং সেই পথে দ্রুত অগ্রসর হতে সাহায্য করে। এর মধ্যে আবার দুটি ভাগ আছে। একটি হলো তাত্ত্বিক বা দার্শনিক দিক বা শিক্ষা। থিওরীটিক‍্যাল এডুকেশন। আর অপরটি হলো ব‍্যবহারীক দিক বা আচরণগত শিক্ষা। প্র‍্যাকটিকাল এডুকেশন।

 

যে মানুষ গড়ার (শিক্ষা) ব‍্যবস্থা ধারণ-পালনের মধ্য দিয়ে একজন ব‍্যক্তি যথেষ্ট বিকশিত মানুষ হয়ে উঠতে পারে, তা'ই হলো মানবধর্ম। আর মানব ধর্মই মহাধ‍র্ম।

 

আরো জানতে হলে, এই ওয়েবসাইটে আসুন-- www.mahadharma.wix.com/bangla

d108_3e7d.jpg

প্রকৃত মানব বা যথেষ্ট বিকশিত মানুষ না হওয়া সত্বেও অনেকের মধ্যেই যে মানবতার কিছু কিছু প্রকাশ আমরা সচরাচর দেখতে পাই, তার মধ্যে থাকে---
১) যেটুকু বিকাশ ঘটেছে, সেইটুকুর প্রকাশ।
২) নৈতিক শিক্ষার দ্বারা চালিত হওয়া বা 'প্রোগ্রামড্' হওয়া মানুষের সক্রিয়তা।
৩) পুণ্য লাভের আশায় তৎপর হওয়া।
৪) নিজের ভাবমূর্তি বা ইমেজ তৈরির স্বার্থে তৎপরতা, যা সম্পূর্ণ অভিনয়।
৫) উপরোক্ত একাধিক পয়েন্টের মিশ্রিত ফল।

প্রকৃত মানবতার মধ্যে শুধু সৎ ও সহৃদয় হয়ে ওঠাই থাকেনা, থাকে যথেষ্ট বিকশিত মনের মানুষ হয়ে ওঠা। একজন বিকশিত মানুষ সতঃস্ফূর্ত ভাবেই সৎ ও হৃদয়বান হয়ে থাকে। 
আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে আসুন।
www.mahadharma.wix.com/bangla

www.mahadharma.wix.com/magazine

সন্তানকে মানুষ করা মানে শুধু খাইয়ে পড়িয়ে শখ-আহ্লাদ মিটিয়ে বড় করে তোলা নয়! তাদেরকে মানুষ করার আগে, নিজেকে মানুষ ক'রে তুলতে হবে।
নিজেরা মানুষ হব না, মানুষ হওয়ার চেষ্টাও করব না। কিন্তু অপরের কাছ থেকে মানবতা আশা করব! তাই কখনো হয়!!

বাস্তব সত্য

এই পরিবর্তনশীল অনিত‍্য বাস্তবে--- সত্য কখনোই স্থির নিত্য হতে পারে না। আজ যা সত্য ---কালই তা' মিথ্যা হয়ে যেতে পারে। আবার, কালকের মিথ্যা আগামীতে সত্য বলে পরিগণিত হতে পারে।

কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকলেই হবেনা, আমাদের চেতনায় তা' ধরা না দিলে, আমাদের কাছে সে অস্তিত্বশীল হতে পারবে না। সত্য--মিথ্যা এসবই তো আমাদের জ্ঞান ও চেতনার উপর নির্ভরশীল। আমাদের জ্ঞান ও চেতনাও পরিবর্তনশীল হওয়ায়, এই জ্ঞান ও চেতনা সাপেক্ষে এখানে সব কিছুই আপাত সত্য।

যা অস্তিত্ব সম্পন্ন তা'ই বাস্তব, যা বাস্তব তা'ই সত্য। সে অস্তিত্ব আমরা বোধ করতে পারি বা না পারি, সে আছে। সে আমাদের নিকট অস্তিত্ব বিহীন হলেও সে আছে। আমাদের বোধ--- উপলব্ধির বাইরে বহু অস্তিত্ব--- বহু সত্য আছে, যারা আমাদের কাছে--- থেকেও নেই।

আবার, কোনো কিছু আমাদের কাছে বিশেষ কোনো রূপে ধরা দিলেই যে সেটাই তার প্রকৃত রূপ তা' না ও হতে পারে। একটা মানুষকে আমরা যে রূপে দেখছি, সেটা তার প্রকৃত রূপ নাও হতে পারে। যেমন চাঁদকে আমরা যে রূপে দেখছি, সেটা তার প্রকৃত রূপ না হলেও, আমাদের কাছে (পৃথিবী থেকে, নির্দিষ্ট দূরত্ব সাপেক্ষে) সেটাই তার রূপ। তাহলে দেখা যাচ্ছে, কোনো কিছুর অস্তিত্ব আমাদের কাছে অনেক কিছুর সাপেক্ষে অনেক প্রকার হতে পারে।

এই মানব জীবনে পূর্ণ জ্ঞান ও চেতনা লাভ কখনোই সম্ভব নয়। একমাত্র অন্ধ বিশ্বাসের কাছেই আছে পূর্ণ জ্ঞানী, আছে পরম সত্য! অজ্ঞান -অন্ধত্ব দূর হয়ে গেলে , তখন সবই হয়ে যাবে আপাত সত্য।

অস্তিত্ব যে কত প্রকারের হতে পারে, তা' আমাদের ধারণার বাইরে। বস্তু, পদার্থ, শক্তি, তথ্য ও তত্ত্ব ছাড়াও এই বিশ্বে বহু প্রকারের অস্তিত্ব বিদ‍্যমান। আমাদের স্বল্প বোধ শক্তি বা ক্ষমতা নিয়ে আমরা তার অতি সামান্য অংশকেই জানতে পারি--- উপলব্ধি করতে পারি।

মানব জীবনের মূল লক্ষ্য হলো-- মানবত্ব লাভ। পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠা।    ~মহর্ষি মহামানস
37684809_247621082721830_481622971702575
আমাদের দর্শনে, এই মহা বিশ্বই হলো (প্রচলিত অর্থে) ঈশ্বর। এর আছে একটি মন। সে- ই বিশ্বরূপ ঈশ্বরের মন। 

আমরা যখন নিজেকে 'আমি' বলি, তখন যে বলে, সে তো 'মন' -ই, আবার যার উদ্দেশ্যে বলা হয়, সেও 'মন'। এই আমিই তো কর্তা।

ঈশ্বরের ক্ষেত্রেও তা'ই। সকল কর্মের কর্তা যে সে হলো--- 'মন'। ঈশ্বর- মন।

এখন, আমরা ঈশ্বর শব্দটি ব‍্যবহার ক‍রলে, অনেক ভুল বোঝা বুঝি হতে পারে। তাই, আমরা 'ঈশ্বর' কথাটির পরিবর্তে 'বিশ্বাত্মা' কথাটি ব‍্য‍বহার ক‍রবো। 
প্রথম প্রথম অসুবিধা হলেও, পরে সবাই যখন জানতে পারবে, তখন আর অসুবিধা হবেনা, বরং অনেক ভালো হবে।

আত্মজ্ঞান আত্মোপলব্ধী হলো নিজ সম্পর্কে জ্ঞান, নিজেকে বোঝা ও অনুভব করা।
সমগ্র মনই হলো আত্মা।একমাত্র আত্ম-ধ‍্যানেই তা' উপলব্ধ হয়।

38126926_148038492752947_184026047119884

বিস্ময়কর সাফল্য লাভ করো!

প্রতিদিন মাত্র এক মিনিট, স্থির হয়ে চোখ বুঁজে ধ‍্যানে বসে যাও। ---একাগ্র মনে যথাসম্ভব স্পষ্টভাবে কল্পনা করো~ তুমি যা করতে চাও, বা তুমি যা হতে চাও, অথবা তুমি যা পেতে চাও। যেকোনো একটি বিষয়ে, ঠিক চলচ্চিত্রের মতো--- মনের পর্দায় প্রত‍্যক্ষ করো।

তারপর, কিছুদিনের মধ্যেই তুমি এর বিস্ময়কর ফল লাভ করবে। অর্থাৎ তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। তবে মনেরেখো, তোমার চাহিদা যেন অবাস্তব, অমানবিক, অন‍্যায় না হয়।

তোমার এই কল্পনা যত স্পষ্টভাবে ভিসুয়ালাইজ হবে। তত তাড়াতাড়ি এবং তত ভালো ফল লাভ করতে পারবে তুমি।

যদি তোমার মন স্থির হতে না পারে, তাহলে ধ‍্যানের পূর্বে কিছুক্ষণ মনের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রেখে, গভীরভাবে শ্বাস- প্রশ্বাস নাও (consciously deep breathing) । তোমার সাফল্য কামনা করি।

38132228_256659681817970_185140115250819
মানুষের অসুস্থতাসহ মনের অন্ধকার দূর ক'রে, মনোবিকাশে সাহায্য করাই একটি আরোপিত ধর্মের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
                                              ~মহামানস

ধর্ম কথা
স্বভাব ধর্ম ও আরোপিত ধর্ম

মানুষের ক্ষেত্রে ধর্ম দুই প্রকারের। একটি হলো তার স্বভাব-ধর্ম, অপরটি আরোপিত ধর্ম।

আরোপিত ধর্ম হলো একটি প্রায়োগিক ব‍্যবস্থা, যা তার অধিনস্ত অথবা অনুসরণকারীদের উপর প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে সৃষ্ট হয়ে থাকে। আরোপিত ধর্ম গঠিত হয়ে থাকে, কয়েকটি বিষয় নিয়ে, যেমন--- দর্শন, নীতি, অনুশাসন, অনুশীলন, আচরণবিধি প্রভৃতি। 
স্বভাব ধর্মের মধ্যে থাকে, মূলত স্বভাবগত আচরণ।

প্রচলিত আরোপিত ধর্ম হলো অজ্ঞান মানুষকে চিরকাল অজ্ঞান অন্ধ মূর্খ বানিয়ে রাখার এক সুন্দর খাঁচাকল।

ভালভাবে বাঁচার জন্য এবং সঠিকভাবে দ্রুত বিকাশলাভের জন্য এই আরোপিত ধর্মটির প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও, স্বভাব ধর্মের মধ্যে কিছু ভালো গুণ থাকে এবং কিছু খারাপ গুণও থাকে। সেই খারাপ গুণগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও আরোপিত ধর্মের প্রয়োজন হয়।

কিন্তু প্রচলিত আরোপিত ধর্মগুলি-- এই দুটির কোনোটাই নয়। এই ধর্ম মানুষকে বিপথগামীই করে, বিকশিত করে না।

মানুষের এই অভাব দূর করতেই আত্মপ্রকাশ করেছে, যুগোপযোগী নতুন ধর্ম--- মহাধর্ম।

অনেকেই মানবতা বা মানবিকতা এবং মানবধর্ম এই দুটিকে গুলিয়ে ফেলেন। তাই, এখানে সে সম্পর্কে কিছু বলা প্রয়োজন।


মানবতা হলো--- মনুষ‍্যোচিত সদগুণাবলী। অনেকের মধ্যেই এই সদগুণাবলীর কিছু অংশ প্রকাশিত, আর কিছু অংশ সুপ্তাবস্থায় থাকে।

মানবধর্ম হলো--- মানুষের স্বভাব ধর্ম। এই স্বভাব ধর্মের মধ্যে রয়েছে, ভালভাবে বেঁচে থাকার প্রচেষ্টা আর বিকাশ লাভের প্রচেষ্টা।

কিন্তু প্রচলিত ধর্ম মানুষের এই বিকাশ লাভের স্বভাব ধর্মকে উৎসাহিত না ক'রে, সাহায্য না ক'রে, বরং উল্টে তাকে চাপা দেওয়ার এবং মানুষকে বিপথগামী করে তোলার চেষ্টা ক'রে থাকে।

 

ঈশ্বর লাভ, ঈশ্বরের কৃপা লাভ, স্বর্গ লাভ প্রভৃতি অলীক বিষয় -বস্তুর পিছনে মানুষকে অন্ধের মতো ছুটিয়ে মারে। মুখে সত‍্যের কথা ব'লে, অসত‍্যের পিছনে মানুষকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় প্রবঞ্চক প্রতারকদের মতো। একে তাই মানুষের উপযোগী ধর্ম না বলে বলা উচিত অধর্ম।

মানবিকতা মানুষের স্বভাবগুণ বা স্বভাব ধর্মের একটা অংশ হলেও, অনেক সময় অসুস্থতা, অস্বাভাবিক মানসিক গঠনের কারণে, এবং কুশিক্ষার কারণে, স্বভাব ধর্মের মধ্যে কিছু কিছু খারাপ গুণও থাকতে পারে, অথবা প্রবেশ করতে পারে। ফলে, মানবিকতা রূপ সদগুণাবলীর অভাব দেখা দিতে পারে, এবং অমানবিক গুণের প্রকাশ ঘটতে পারে।

এখন, একটি উপযুক্ত আরোপিত ধর্মের দ্বারা তা' নিরাময়ের ব‍্যবস্থা করাই হলো আমাদের কর্তব্য। আর এই উদ্দেশ্যেই এসেছে--- মহাধর্ম।

এই আরোপিত ধর্মও কিন্তু কিছু উন্নত চেতনার মানুষ তাদের উন্নত স্বভাব ধর্ম থেকেই সৃষ্টি ক'রে থাকেন। বিকাশ বলতে, এখানে মনোবিকাশ বোঝায়। আর, বিকাশের বিভিন্ন স্তরে স্বভাব ধর্মেরও কিছু কিছু পরিবর্তন হয়।

শুধু ধর্মই নয়, প্রায় প্রতিটি সিস্টেম বা ব‍্যবস্থার মধ্যেই কিছু ভালো কিছু খারাপ জিনিস থাকে।

এখন, যদি সেই ব‍্যবস্থার নিয়ন্ত্রকগণ অথবা তার অধীনস্থ মানুষ--- সেই খারাপ দিকটাকে দূরীকরণের চেষ্টা না ক'রে, শুধু ভালো দিকটাকে নিয়েই গর্ব- মত্ত হয়ে থাকে, তাহলে একদিন না একদিন, সেই খারাপ অংশটা বৃদ্ধি পেতে পেতে ক্রমশ সমস্ত অংশটাকেই গ্রাস করে ফেলবে। ফলস্বরূপ একসময় সেই ব‍্যবস্থাটি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।

===============================================

হাজার হাজার বছর ধরে অজ্ঞান—অসহায় মানুষ অন্ধ-বিশ্বাস ভিত্তিক (আরোপিত)ধর্মের অধিনস্ত হয়ে আসছে। এই সুদীর্ঘকালের ধর্ম-শিক্ষায় মানুষের ওপরটাতে মেকী সভ্যতার চাকচিক্য— ধর্মীয় ভেক বা ভন্ডামোর ছাপ পড়েছে শুধুমাত্র, অন্তরের অন্ধকার ঘোঁচেনি এতটুকুও। মানুষ যে তিমির সেই তিমিরেই রয়ে গেছে আজও। প্রচলিত ধর্ম মানুষের সচেতন মনের বিকাশ ঘটাতে চায়নি কোনদিনই।

প্রচলিত ধর্ম ও রাজতন্ত্র (বর্তমানে রাজনীতি) উভয় উভয়ের স্বার্থে —একে অপরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সচেস্ট। মেকী মানবসভ্যতার অন্যতম ভিত্তি স্বরূপ শক্তিশালী তিনটি স্তম্ভ হলো— ধর্ম, রাজতন্ত্র আর বৈশ্যতন্ত্র। এরা পারতপক্ষে (কম-বেশি) প্রত্যেকেই মানুষকে অজ্ঞান-অন্ধ ক’রে রাখতে— তাদের খুশিমতো মানুষকে ব্যবহার করতে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর। মানব মনের যথেষ্ট বিকাশ —এদের কাম্য নয়।

এককালে, আদিম মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, তাদেরকে সমাজবদ্ধ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ ক’রে তুলতে, প্রচলিত ধর্মের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কালের সাথেসাথে তা’ সময়োপযোগী না হয়ে ওঠায়, এখন তার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে অনেকাংশে। অন্ধ-বিশ্বাস ভিত্তিক ধর্ম মানুষকে কখনোই প্রকৃত জ্ঞানের পথে— সত্যের অভিমুখে অগ্রসর হতে সাহায্য করেনা। আজ চারিদিকে যে ভীষন অসুস্থতা— অরাজকতা, বিকার-বিকৃতি, যে তমসাচ্ছন্ন ঘোর সঙ্কট পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা’ অনেকাংশেই এই ধর্মের গর্ভে সৃষ্ট। ধর্ম নিজেই যদি অজ্ঞান-অন্ধ —দুষিত —অসুস্থ, বিকারগ্রস্ত হয়, তার গর্ভজাত সন্তান ভাল হয় কীকরে! দু-একজন ব্যতিক্রমী মানুষকে নিয়ে আহ্লাদিত হলে হবেনা!

সারাবিশ্বে যত গন্ডগোল— যত সমস্যা— সঙ্কট, তার অধিকাংশের জন্যই দায়ী হলো— অন্ধ-বিশ্বাস। যে ব্যক্তি বা বিষয় সম্পর্কে আমার সম্যক জ্ঞান নেই, সেই ব্যক্তি বা বিষয় সম্পর্কে কোনো ধারণাকে ‘সত্য’ বলে— নিশ্চিতভাবে মনে স্থান দেওয়াই হলো— বিশ্বাস বা অন্ধ-বিশ্বাস। এযে কত বিপদজনক —কী মারাত্মক, তা’ একটু সজাগ দৃষ্টিতে চারিদিকে তাকালেই বোঝা যাবে। বোঝা না গেলে, —সে-ও হবে ঐ অন্ধ-বিশ্বাসের কারণেই। জ্ঞানী মানুষ মাত্রই তাদের ধারণা—বিশ্বাস—জ্ঞানকে আপাতসত্য জ্ঞান ক’রে থাকেন।

পুরস্কারের লোভ আর শাস্তির ভয় দেখিয়ে পশুকে এবং পশুতুল্য নিম্নচেতনস্তরের মানুষকে নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। একটু জ্ঞান-চক্ষু ফুটলে— সচেতন মনের একটু বিকাশ ঘটলেই— সে মানুষ তখন আর ওসবের দ্বারা কারো নিয়ন্ত্রণে থাকেনা। তাই, ধর্মও চায়না মানুষের চেতনার বিকাশ ঘটুক। স্বর্গলাভ—পূণ্যলাভ প্রভৃতি পুরস্কারের লোভ আর নরকাদি শাস্তির ভয় দেখিয়ে, দিব্য-চেতনার নামে আজগুবি দার্শনিক তত্ত্বে ভুলিয়ে— মানুষকে অচেতন করে রাখতেই সে বেশি আগ্রহী।

আজকের এই করুণ পরিস্থিতিতে মানবজাতিকে রক্ষা করতে, চাই— ‘মানবধর্ম’। যে ধর্ম মানুষকে মিথ্যার পিছনে না ছুটিয়ে— ছোটাবে ‘পূর্ণ বিকশিত মানুষ’ হওয়ার লক্ষ্যে। হ্যাঁ, ইতিমধ্যে সে-ও একটু একটু করে আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করেছে! এখন, তাকে অভ্যর্থনা জানাতে হবে আমাদের নিজেরদের স্বার্থেই।

গুগল বা ফেসবুকে গিয়ে— ‘মহাধর্ম’ (MahaDharma) সার্চ করলেই তার দেখা পাওয়া যাবে। মানব ধর্মই মহাধর্ম।

==============================================

যুগ যুগ ধরে মানুষ প্রচলিত ধর্মীয় শাসন ও শিক্ষার অধিনে থেকেও, তার যথেষ্ট মনোবিকাশ ঘটেনি এখনো। যে তিমির সেই তিমিরেই পড়ে আছে।

এর চাইতে, মানুষ যদি প্রচলিত ধর্ম হতে মুক্ত থেকে, স্বাভাবিক মানব ধর্ম অনুযায়ী পৃথিবীর মুক্ত পাঠশালায় শিক্ষা গ্রহণ করতো, তাহলে অনেক অনেক বেশি বিকাশলাভ করতে পারতো।

==============================================

ধর্ম-টা ব‍্যক্তিগত ব‍্যপার, ব‍্যক্তি স্বার্থের ব‍্যপার হলে বিশেষ সমস‍্যা থাকেনা। কিন্তু, সেটা যখন গোষ্ঠিগত ব‍্যপার, গোষ্ঠীগত স্বার্থের ব‍্যপার হয়, এবং সেই গোষ্ঠি যদি গোড়া মৌলবাদী গোষ্ঠি হয়, তখন সেই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত অথচ স্বাধীনচেতা বা মুক্তমনের মানুষের পক্ষে তা' সঙ্কটের কারণ হয়ে ওঠে।

কেউ কেউ প্রচলিত ধর্মের মধ্যে থেকে, তার সেই ধর্মকে সংশোধন ---পরিবর্তন করতে চায়। খুব উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব‍্যক্তি হলে, কিছুটা পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হলেও হতে পারে। সাধারণ মানুষের পক্ষে তা' সম্ভব হবেনা। উল্টে প্রাণটাই যাবে।

​==============================================

দিব্যজ্ঞান লাভ করতে চাও? —আগে কান্ডজ্ঞান লাভ করো! (ভক্ত ও

অনুগামীদের প্রতি মহামানসের উক্তি)

যদি দিব্যজ্ঞান লাভ করতে চাও, তাহলে— আগে কান্ডজ্ঞান লাভ করো। মোহ-মায়া —অজ্ঞানতা থেকে মুক্ত হতে পারলে, —তবেই মুক্তিলাভ সম্ভব হবে।

পূর্ণ বিকাশলাভই এই জীবনের অন্তিম লক্ষ্য। তার জন্য পায়ে পায়ে— সমস্ত পথ অতিক্রম করতে হবে। চেতনার পথে যত এগিয়ে যাবে, —ততই বন্ধন মুক্ত হবে, —ততই স্বাধীন হয়ে উঠবে। তবে, ফাঁকি দিয়ে— ফাঁক রেখে, কাউকে ঘুষ দিয়ে— কোনো জাদু-মন্ত্র বলে এই সুদীর্ঘ যাত্রাপথ ডিঙিয়ে যাওয়ার অলীক চিন্তা কোরো না।

যে যতই প্রলোভন দেখাক না কেন, বর্তমান মানব-চেতন স্তরে কোনো ভাবেই মুক্তিলাভ— মোক্ষলাভ— দিব্যজ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। তাই, যথাসম্ভব মুক্তমনা হয়ে, যথাসাধ্য সজাগ— সচেতন থেকে, আত্মজ্ঞান— আত্মবিকাশ লাভে সচেষ্ট হও।

কেউ অত্যল্প অতিন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী হয়েই— নিজেকে একজন কেউকেটা ভাবছে। আবার কেউ কেউ মানুষ ঠকানোর মতো কিছু ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতা, —কিছু প্রতারণা মূলক কৌশল অথবা প্রেতশক্তির সাহায্য নিয়ে— নিজেদেরকে ঈশ্বর অথবা ঈশ্বরের প্রতিনিধি রূপে উপস্থাপিত করছে।

কান্ডজ্ঞান বিহিন— লোভী মানুষই প্রধানত এদের শিকার হয়। এদের মতো লোভে পড়ে, বিকাশের পথ ছেড়ে— বিপথগামী হয়োনা।

আগের কাজ আগে করো। পূর্ণ বিকশিত মানুষ হওয়ার আপাত লক্ষ্যে এগিয়ে যাও। তার পরের ধাপে— ‘মহামানব’ হও। তারপর আস্তে আস্তে দেবচেতন স্তরে উন্নীত হবে। তারওপরে ‘মহাদেব’ চেতনা সম্পন্ন হয়ে উঠবে, এবং ক্রমে পূর্ণ বিকাশলাভ করবে। এই উচ্চতর থেকে উচ্চতম চেতনস্তর গুলির বিকাশ ঘটবে— ভিন্ন ভিন্ন লোকে, —এই পৃথিবীতে নয়।


মনেরেখ, ঈশ্বরের এই বিধান— এই জাগতিক ব্যবস্থাকে লঙ্ঘন করার সাধ্য— ঈশ্বরেরও নেই। সে তুমি যতই তার পূজা— উপাসনা ও প্রার্থনা করো না কেন!

==============================================

ঈশ্বর আছে কি নেই, থাকলে তার স্বরূপ কি —তা’ যুক্তি-বিচার দিয়ে বোঝার চেষ্টা কর। অজ্ঞান-অন্ধের মতো কেন চোখ বুঁজে তা’ বিশ্বাস করবে!?

মনে রেখ, যুক্তি—কারণ ছাড়া এখানে কোন কিছুই ঘটে না। ঈশ্বরকে যুক্তি-বিচারের সাহায্যে বোঝা যায় না, —একথা ঠিক নয়। তোমার যেটুকু বোঝার ক্ষমতা আছে— সে টুকুই বোঝ। কল্পনার ঈশ্বরকে বিশ্বাস করার চাইতে তা’ অনেক গুণে ভালো। কল্পনার ঈশ্বরকে নিয়ে তৃপ্ত থাকা— মুর্খের স্বর্গে বাস করার সমান।

ঈশ্বরকে তার স্বরূপে জানা—বোঝার ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকলে, ‘মহাধর্ম’ পুস্তকটি তোমার কাজে লাগতে পারে। মানব ধর্ম হলো মানুষের মূলগত ধর্ম। মানব ধর্মই মহাধর্ম।

নেতা-মন্ত্রীরা তো আর আকাশ থেকে নেমে আসেনি! আমাদের ঘর থেকেই উঠে এসেছে!
আমরা মানুষ না হলে, তাদের কাছ থেকে মনুষত্ব আশা করি কি করে!
প্রচলিত ধর্ম- মানব জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মানুষের মনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করার ফলেই, যথোচিত মানব বিকাশ সম্ভব হয়নি।           ~মহর্ষি মহামানস
কাল্পনিক ঈশ্বরের কৃপা লাভের পিছনে না ছুটে, মানবত্ব লাভের জন্য এগিয়ে যাও। তাতেই মানবজীবন সার্থক হবে।

'মানব ধর্মই মহাধ‍র্ম'

প্রাচীন পুঁথি, গ্রন্থ এবং রূপকথাসম বিভিন্ন পুরাতন কাহিনী, আর নানা প্রবচনগুলোকে পুঁজি করে, কিছু কুচক্রী ধ‍র্ম- কারবারিগণ শাস্তি ও পুরস্কারের (বন‍্য পশুদের পোষ মানানোর পদ্ধতিতে) ভয় ও লোভ দেখিয়ে, সেকেলে অজ্ঞান- অন্ধ সরল মানুষদের বশীভূত করেছিল, তাদের হীন স্বার্থ পু্রনের উদ্দেশ্যে এবং কিছুটা তৎকালীন সমাজের প্রয়োজনে।

পরম্পরাগতভাবে আজকের মানুষও সেই ফাঁদেই পড়ে আছে এখনো।

এখনো পরিবার -সমাজ ও ধর্মগুরুদের কথায় অজ্ঞান- অন্ধের মতো বা অতি সরল মনে, বিনা যুক্তি- বিচার ছাড়াই সেইসব ধর্মের বুলি সর্বাংশে বিশ্বাস ক'রে নেওয়াটা, আজকের মানুষের পক্ষে বিজ্ঞানমনষ্কতা বিহীন অতি শিশু মনেরই পরিচয়।

আজকের উন্নত চেতনার শিশুরাও যা বিনা প্রশ্নে এবং সন্তোষজনক উত্তরের অভাবে সহজে নিঃসংশয়ে মেনে নেবে না।

বিশ্বাত্মা (ঈশ্বর) সর্বশক্তিমান নয়। ভাগ্যের কাছে তার হাত-পা বাঁধা। 
তার ঐচ্ছিক শক্তি ভাগ্যরূপ অনৈচ্ছিক শক্তির কাছে অসহায়।
যে ব‍্যক্তি অহেতুক অযথা মিথ্যে কথা বলে, তার স্বপ্ন~ তার আশা-আকাঙ্খা সবই অবশেষে মিথ্যেয় পরিণত হয়।
মায়ার এই গণ্ডিটা পার হতে এতো সংশয়! 
কারণ মিথ্যা অস্তিত্বটা বিলুপ্ত হওয়ার ভয়!

'মানব ধর্মই মহাধর্ম'

'আধ‍্যাত্মিক' হলো মন সম্পর্কিত, আর
আধ‍্যাত্মিক শক্তি হলো মানস শক্তি। যার মন যতটা বিকশিত, সে ততটাই আধ‍্যাত্মিক শক্তি সম্পন্ন।

37420300_1904345402942039_56369256958766
তুমি ফুল ভালোবাসো, কারণ ফুলের রঙ- রূপ- গন্ধ- স্পর্শ তোমাকে তৃপ্ত করে--- আনন্দ দেয়। 
আসলে, ফুল হলো উদ্ভিদের জননাঙ্গ। এবার, ফুলকে তার স্বরূপে জানার পর--- যখন তুমি তাকে ভালবাসবে, সে- ই হবে খাঁটি ভালবাসা।
মহাধ‍র্ম প্রতিটি সমস্যার আলাদা করে সমাধান বলেনা। বলে, মানুষ যথেষ্ট বিকশিত হলে, সে নিজেই এইসব সমস্যার সমাধান করতে পারবে।                                                   ~মহামানস
38391275_256264888524116_520552302729442
লক্ষ লক্ষ অজ্ঞান- অন্ধ ভক্তদের চাইতে দু- চারজন সচেতন জ্ঞানী ভক্তই আমার অধিক প্রিয়। আমাকে সঠিকভাবে জানার পর--- আমার স্বরূপ জানার পর যে আমাকে ভালবাসে, তার ভালবাসাই আমার কাম‍্য। অন্ধ আবেগ সর্বস্ব অজ্ঞানীর ভালবাসার আপাত মূল্য থাকলেও, তা' অশুভত্ব ব‍্যঞ্জক। অনেক সময়েই এই উন্মাদনা মারাত্মক আকার ধারণ করে থাকে। তাই আমার সমস্ত ভক্তদের বলি, সর্বাগ্রে আমাকে জানো, আমার মত ও পথকে জানো। 
আমাকে আমার প্রকৃত রূপে জানার পরেও যদি ভাললাগে, ---যতটুকু ভাললাগে, ততটুকুই ভালবাসো। সেটুকুই হবে খাঁটি ভালবাসা।
মহাধ‍র্ম
ঈশ্বর লাভ বা ঈশ্বরের কৃপা লাভ নয়, ঈশ্বরত্ব লাভই আমাদের অন্তিম লক্ষ্য।
~মহামানস
bottom of page