মুক্তমনের যুক্তিবাদী আধ্যাত্মিক চেতনা সম্পন্ন, আত্মবিকাশকামী মানুষের উপযোগী অন্ধবিশ্বাস মুক্ত, মানব বিকাশমূলক ধর্ম~ মহাধর্ম।
মানুষ যেদিন অহংকার মুক্ত হয়ে বলতে পারবে, 'আমি যথেষ্ট বিকশিত মানুষ নই। আমাকে মানুষ হতে হবে।'
সেদিন থেকেই প্রকৃত মানববিকাশ শুরু হবে।
ঈশ্বরের সেবা--- ঈশ্বরকে খুশি করতে মানুষের সেবা করা, এগুলো আমাদের সমাজে বহু প্রচলিত--- বহুশ্রুত কথা।
সেবা পাওয়া এবং সেবা দেওয়া--- এসবই হলো মানুষী চাহিদা--- মানুষী চিন্তা। মানুষের তৈরি ঈশ্বর, ---সেও যে সেই মানুষের মতই চাহিদা ও ভাবনা সম্পন্ন হবে, এতে আর আশ্চর্যের কী।
তাই, ঈশ্বরও মানুষের কাছে--- মানুষের মতোই সেবা ও পূজা চেয়ে থাকে।
এখন, প্রকৃত ঈশ্বরের সন্ধান যার জানা নেই, জানার চেষ্টাও নেই, তার পক্ষে এই স্বরচিত অথবা অন্য কারো দ্বারা রচিত ঈশ্বরকে নিয়েই মেতে থাকা ছাড়া উপায় কী।
আর সেক্ষেত্রে, প্রকৃত ঈশ্বরের পক্ষে মানুষের কাছ হতে সেবা বা পূজা পাওয়ার চাহিদা থাকাটা আদৌ সম্ভব কি না, তা' তলিয়ে ভাবারই বা অবকাশ কোথায়!
মানুষের সেবা কর্মকে খুব মহৎ কর্ম হিসেবেই গণ্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু তা' যদি কাল্পনিক ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য এবং তাকে খুশি ক'রে কিছু লাভ করার জন্য সম্পাদিত হয়ে থাকে, তাহলে তখন তা' আর মহৎ কর্ম হিসেবে গণ্য হয়না।
মানবত্ব লাভের পরে, সমস্ত মানুষকে যখন নিজেরই অংশ মনে ক'রে ভালবাসতে পারবে, এবং নিজের সেবার্থেই মানুষের সেবা করতে পারবে, একমাত্র তখনই সাধিত হবে প্রকৃত মানবসেবা।
তাই প্রকৃত মানব সেবার জন্য তোমাকে মানবত্ব লাভ করতে হবে অর্থাৎ যথেষ্ট বিকশিত মানুষ হয়ে উঠতে হবে সবার আগে।
সময় বদলাচ্ছে, অনেক কিছুই বদলে গেছে। কিন্তু আমরা বদলাইনি! আমরা এখনো সেই তিমিরেই রয়ে গেছি!!
।। নিজের মনের দিকে নজর রাখো ।।
এমনিতেই আমরা অধিকাংশ সময় নানা চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকি, একটা ঘোর লাগা অবস্থার মধ্যে বিরাজ করি।
তারপরে আবার যদি পেটে বায়ু জমে, তখন মাথাটা ভারি বোধ হয়। তখন আরো ঘোর লেগে যায়। সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে মানসিক কর্মে অক্ষম হয়ে পড়ি আমরা তখন।
অনেকটা তেমনই ঘটে থাকে, প্রেম সম্পর্কীত চিন্তায়, ধর্ম বিষয়ক চিন্তায়, অর্থ বা স্বার্থ সম্পর্কীত চিন্তায় এবং নেশাচ্ছন্ন অবস্থায়।
এই সমস্ত ঘোরলাগা অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে যথাসম্ভব মুক্ত থাকতে পারলে, সজাগ-সচেতন থাকতে পারলে, তবেই আমরা ভালো থাকতে পারবো। অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবো। জীবনে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারবো।
এর জন্য নিজের দিকে-- নিজের মনের দিকে মাঝে মাঝেই দৃষ্টিপাত করতে হবে। মনের উপর নজর রাখতে হবে। মন কি করছে, কি ভাবছে লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের। এইভাবে প্রতিদিন অভ্যাস করতে করতেই দেখা যাবে, একসময় আমরা মনের মালিক হয়ে উঠেছি। মনের উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হয়ে উঠেছি।
এই লিঙ্ক অনুসরণ করে, মন-আমি-যোগ অভ্যাসের ভিডিও ডাউনলোড করতে পারবেন।
https://drive.google.com/…/1umBCshK6rS6w62tFihyjpTQaJ…/view…
বিশ্বাসের মাধ্যমে সুস্থতা লাভ ও সাফল্য লাভের আসল কারিগর হলো আমাদের অবচেতন মন। নিজের মনকে জানো। তাহলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
বিকাশের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। এই মানব চেতন স্তরে সচেতন-মনের বিকাশই আমাদের লক্ষ্য।
সচেতন-মনের যথেষ্ট বিকাশ ঘটার পরে, তখন আমাদের লক্ষ্য হবে দেব-চেতন বা অতিচেতন মনের বিকাশ। তখন আর যুক্তি-বিচারের প্রয়োজন হবে না। ক্রমশ অর্জিত অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা বলে-- তখন লাভ হবে সম্যক জ্ঞান।
কিন্তু লাফদিয়ে ডিঙিয়ে গেলে অথবা ডিঙিয়ে যাবার চেষ্টা করলে, কোনো উদ্দেশ্যই পূর্ণ হবে না।
~মহর্ষি মহামানস
मानव धर्म का मतलब सिर्फ दयालु--धार्मिक होना नहीं है, एक पूरी तरह से विकसित (मनका) आदमी बनने के लिये अभ्यास वाला धर्म है।
কাউকে একদিন খাইয়ে সেবা করার চাইতেও বড় সেবা হলো, তাকে সাবলম্বী হয়ে উঠতে সাহায্য করা। যাতে সে অন্যদেরও সাহায্য করতে সক্ষম হয়ে ওঠে।
ব্যক্তি যথেষ্ট সুস্থ শান্তিপূর্ণ বিকশিত হলে, তার পরিবার, ক্রমে তার সমাজ, ক্রমে তার দেশেও সুস্থতা শান্তি বিকাশ বিরাজ করবে।
আস্তিক আর নাস্তিক নিয়েই পড়ে আছো!
কিন্তু এর বাইরেও যে জগৎ আছে তোমরা জাননা !
তোমরা জীবনের আসল পথই খোঁজো না !!
মহাধর্ম
আস্তিক-নাস্তিক রূপ কোনো অন্ধ বিশ্বাসীদের ধর্ম নয়। মহাধর্ম হলো খোলা মনের যুক্তিবাদী আত্ম-বিকাশকামী মানুষের ধর্ম।
মানবধর্ম।
মুক্তমনার স্বরূপ কি
সমস্ত প্রভাব থেকে মুক্ত, সম্পূর্ণ স্বাধীণ- সুস্থ ও জাগ্রত মনই হলো প্রকৃত মুক্ত মন। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি পাওয়া প্রায় অসম্ভব, তাই, অনেকাংশে প্রভাব মুক্ত, স্বনিয়ন্ত্রনাধীণ- স্বাধীণ ও সুস্থ মনকেই আমরা মুক্তমন বলে থাকি।
এই মন কোনো কিছুর দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে পড়লেও, -অচিরেই সে সেই প্রভাব থেকে নিজেকে অনেকাংশে বা সর্বাংশে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। যে তার মনের অবস্থা বুঝতে পারে- মনকে দেখতে পারে- তেমন আত্মসচেতন মনই হলো- মুক্ত মন।
যে যত জ্ঞানী এবং যার সচেতন মন যত বেশী বিকশিত- সে ততটাই স্বাধীণ। সেই মনই হলো মুক্ত মন, যে যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনার অধিকারী, এবং ক্রমশ আরো বেশি জ্ঞান ও চেতনার অধিকারী হবার জন্য- নিজের মনোবিকাশের জন্য সদা সচেষ্ট থাকে।
জ্ঞান ও চেতনা যত বৃদ্ধি পাবে, ততই আমাদের মন প্রভাব মুক্ত- স্বতন্ত্র- স্বনিয়ন্ত্রনাধীন হয়ে উঠবে। এই প্রভাব শুধু বাইরের নয়, ভিতরেরও। ভিতরের সহজাত প্রবৃত্তি- বদ্ধমূল সংস্কার, অজ্ঞানতা প্রসুত মোহ-মায়া -মিথ্যা অহংকার প্রভৃতি থেকে মুক্তি ঘটলে- তবেই সে হতে পারবে মুক্তমনা।
খুবই কম জ্ঞান ও চেতনা সম্পন্ন মনকে চলতে হয়- বিশ্বাস, অন্ধ-আবেগ এবং তদভিত্তিক কল্পনা, আর কিছু সাধারণ যুক্তির সাহায্য নিয়ে। পরবর্তী উচ্চ চেতনা সম্পন্ন মন- তার সর্বোচ্চ বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত, সে ক্রমশ প্রভাব মুক্ত হয়ে প্রায় নিরপেক্ষ যুক্তি-বিচার এবং তদভিত্তিক কল্পনার পথ ধরে এগিয়ে থাকে।
মুক্তমনা মানেই যে সে নাস্তিক হবে- এমন ধারণা ঠিক নয়। আবার, কোনো নাস্তিক যদি নিজেকে মুক্তমনা ভাবে, -সেটাও ঠিক নয়। কারো বিশ্বাসের সাথে কেউ সহমত না হলেই সে নাস্তিক হয়ে যায়না। নাস্তিক কখনোই মুক্তমনা হতে পারেনা। কারণ, নাস্তিক মানেই সে অন্য কোনো দর্শন বা তত্ত্বে দৃঢ় বিশ্বাসকারী।
‘বিশ্বাস’ কথাটি মুক্তমনার খাতায় নেই। সে এগিয়ে চলে- আপাত সত্যের হাত ধরে, পূর্ণ সত্যের লক্ষ্যে। যুক্তি-বিচার -প্রমানাদির মধ্য দিয়ে, তার ঈশ্বর-অস্তিত্বের উপলব্ধি ঘটতেই পারে। যদি সে সত্যানুসন্ধিৎসু হয়ে আত্মজ্ঞান লাভে এবং জীবন রহস্য উন্মোচনে (কে-কি-কেন-কোত্থেকে-কোথায় জানতে) ব্রতী হয়। যদি সে সত্যনিষ্ঠ হয়ে শিকরের সন্ধান করে। তবে, স্বভাবতই- তার ঈশ্বর আর সাধারণ বিশ্বাস প্রবণ মানুষের প্রচলিত ধারণার ঈশ্বর কখোনই এক রূপ হবেনা।
প্রকৃত মুক্তমনা হলো— অনেকটাই উন্নত মনের মানুষ— বিকশিত মনের মানুষ। যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনা বিকাশের ফলে সে মোহ-মায়া— বিশ্বাস-কুসংস্কারের বন্ধন থেকে অনেকটাই মুক্ত।
একজন মুক্তমনা কখনোই আত্মবিকাশ— মনোবিকাশের পথ থেকে সরে আসতে পারেনা— মানবধর্মকে অস্বীকার করতে পারেনা।
মুক্তমনা মানে সমাজ-সংসারের বাধা-বন্ধন, মানবতার দায়-দায়িত্ব থেকে মুক্ত— বাতুল বা বায়ু প্রকৃতির মানুষ নয়। কান্ডজ্ঞানহীন বায়ু রোগগ্রস্ত যথেচ্ছাচারী মানুষ আসলে অসুস্থ মানুষ। আমি মুক্ত— আমি মুক্ত বলে, চিৎকার করলেই, মুক্ত হওয়া যায়না।
চেতনার পূর্ণ বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত, কারো পক্ষেই সম্পূর্ণতঃ জাগতিক বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া— পুরোপুরি স্বাধীন হওয়া সম্ভব নয়।
একটি অতিশিশু অথবা অতিশিশু-চেতন স্তরের মানুষকে, অথবা অস্ফূট মনের মানুষকে আমরা মুক্তমনা বলতে পারি না। কোনো অসুস্থ মনের মানুষকেও মুক্তমনা বলা যাবেনা।
প্রকৃত মুক্তমনা মানুষ সচরাচর দেখা না যাওয়ার ফলে, অনেকে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে, এদেরকেই মুক্তমনা ব’লে, মনে ক’রে থাকে। প্রকৃত মুক্তমনা হতে হলে, অনেক উন্নত মনের— অনেকটাই বিকশিত মনের মানুষ হতে হবে। মনোবিকাশের পথই জীবনের পথ, পূর্ণ মনোবিকাশই আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য।
সংকর জাতির মানুষের ক্ষেত্রে, প্রতিটি মানুষই ভিন্ন ভিন্ন জাতির মানুষ।
~মহর্ষি মহামানস
"একজন মানুষকে ভালভাবে চিনতে হলে, বিভিন্ন পরিবেশ- পরিস্থিতিতে তাকে লক্ষ্য করতে হবে~ প্রভাব মুক্ত খোলা মনে মানুষ চেনার ইচ্ছা নিয়ে।"
ওষুধ এবং ওষুধ রূপে কোনকিছু খাওয়া বা প্রয়োগ করা, অথবা ধারণ বা পালন করার পূর্ব থেকেই, আবার কখনো কখনো তার পর থেকে আমাদের মনে যে বিশ্বাস ও প্রত্যাশা জন্মায়, সেই প্রত্যাশাকে সফল করে তুলতে আমাদের মন সক্রিয় হয়ে ওঠে।
তার ক্ষমতার মধ্যে থাকলে, সে নিজেই তা' কার্যকর করে তোলে। প্রয়োগ করা বস্তুর মধ্যে দ্রব্যগুণ না থাকলেও।
আমাদের অবচেতন মনের এই বিশেষ ক্ষমতা বলেই অনেক সময় আমরা আরোগ্য লাভ করে থাকি। এর প্রচলিত নাম হলো 'ফেথ কিওর'।
Hypnotherapy -র দ্বারা আরোগ্য লাভের পিছনেও রয়েছে সেই অবচেতন মন।
বিকাশমান চেতনার পথে, অস্ফুট চেতন- স্তর থেকে পূর্ণ চেতনার লক্ষ্যে আমরা সবাই এগিয়ে চলেছি। এখানে বিভিন্ন কারণে কেউ একটু এগিয়ে আছি, কেউ পিছিয়ে।
বর্তমানে আমরা আছি, মানব-চেতন স্তরে। এই স্তরটির অবস্থান সম্পূর্ণ পথের প্রায় মাঝামাঝি।
এখন, মাঝ পথে থেকে সম্পূর্ণ পথের জ্ঞান অসম্ভব। জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে সবারই লক্ষ্য সেই গোল-এ পৌঁছনো, এবং প্রায় সবাই স্বপ্ন দেখি-- যার যেমন সামর্থ্য অনুযায়ী।
কেউ কল্পনায়-- স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে সেখানে পৌঁছে যেতে চায়, কেউ যুক্তিপথে এগিয়ে চলে।
যে একটু এগিয়ে রয়েছে, যার আছে একটু দূরদৃষ্টি, সে হয়তো অস্পষ্ট বা ঝাপসা ভাবে সুদূরের সত্যকে কিছুটা দেখতে পারছে, আর কিছুটা অনুমান করে নিচ্ছে। এই পর্যন্তই। তার বেশি কিছু নয়।
এখন, আমরা যাকিছু জানি তার প্রায় অধিকাংশই হলো আপাত সত্য। আবার বলি, মাঝ পথে থেকে সম্পূর্ণ পথের জ্ঞান অসম্ভব।
আমাদেরকে সবকিছুই আপাতসত্য জ্ঞানে, যুক্তিপথ ধরে এগিয়ে চলতে হবে। কাল্পনিক সম্পূর্ণ জ্ঞানে বা সত্যে পরিতৃপ্ত থাকার চাইতে, আপাতসত্যের হাত ধরে সজাগ সচেতন ভাবে এগিয়ে চলাই উচিত বলে মনে করি আমরা। এটাই মানব- চেতন-স্তরের ধর্ম--- মানবধর্ম।
।। মানব ধর্মই মহাধর্ম ।।