top of page

মহর্ষি মহামানস-এর বিশেষ কিছু উক্তি

"আমরা সবাই এক পথের পথিক, চেতনা বিকাশের পথে।"

  —মহর্ষি মহামানস

"মনোবিকাশ হলো চেতনার বিকাশ। চেতনার স্বল্পতা উপলব্ধি হলেই বুঝবে, তুমি মনোবিকাশের পথে পদার্পণ করেছো। এবার সজাগ সতর্ক হয়ে এগিয়ে যাও।"

সময় আর কিছুই নয় সময় হলো একের পর এক ঘটে চলা ঘটনাগুলির দৈর্ঘ্য।

ঘটনা বা কোনকিছুর ক্রিয়া থেকেই সময় জন্ম নেয়। যেখানে ঘটনা নেই, সেখানে সময়-ও নেই। মহাবিশ্ব সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই মহাজাগতিক সময় এবং মহাকাশ -এর জন্ম হয়। পরম্পরাগত এই মহা ঘটনাক্রম স্তব্ধ হয়ে গেলেই সময়ও স্তব্ধ হয়ে যাবে। ~মহর্ষি মহামানস

"তোমার দশদিক ব‍্যাপী যে বিশ্ব-চরাচর, সেইতো তোমার স্রষ্টা, সে-ই ঈশ্বর! তাকে ছাড়া নেই কোথা কোনো অবিনশ্বর!"

~মহর্ষি মহামানস

"বিশ্বাস নয়। জানি অথবা জানিনা। বড়জোড় 'আপাত-বিশ্বাস'-এর সাহায্য নিতে পারো, তাহলেই দুনিয়ার বহু সমস্যা দূর হয়ে যাবে।"

~মহর্ষি মহামানস

"যুগ যুগ ধরে ঈশ্বরের খোঁজে এবং তার কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে মাথাকুটে মরছে মানুষ। কিন্তু কোথায় পাবে তাকে! অবশেষে ছেলে ভোলানো কাল্পনিক ঈশ্বরকে নিয়েই খুশি থাকতে হচ্ছে মানুষকে!!

অজ্ঞান-অন্ধ মানুষকে যদি বলি, এই মহাবিশ্ব ব্রহ্মান্ড-ই তো আসলে ঈশ্বর! এই মহাবিশ্বে ঈশ্বর অতিরিক্ত আর কোনকিছুর অস্তিত্ব নেই। তুমি তারই একটা অংশ, এবং তার মধ্যেই বিরাজ করছো। হায়, মোহান্ধ মানুষ তা' মেনে নেওয়ার মতো চেতনাবস্থায় নেই।"

~মহর্ষি মহামানস

"যাঁঁরা আমার অন্ধভক্ত, তাঁঁরা কিন্তু আমার প্রকৃত ভক্ত নয়।
শতশত অন্ধভক্তের চাইতে, দু-একজন জ্ঞানী ভক্ত-ই আমার কাম‍্য।"
~মহর্ষি মহামানস

মহাবিশ্ব প্রকৃতিই আমাদের ঈশ্বর আমরা বলি, 'বিশ্বাত্মা'। সে-ই আমাদের স্রষ্টা। এই মহাবিশ্বে বিশ্বরূপ ঈশ্বর ব‍্যতীত আর কোনকিছুর অস্তিত্ব নেই।

মহাধর্ম হলো মানুষের ধর্ম অর্থাৎ মানবধর্ম, মানুষের কল্যাণে এবং মানুষের দ্বারা সৃষ্ট ধর্ম। তথাকথিত কোনো ঈশ্বরের দ্বারা এই ধর্ম সৃষ্টি হয়নি।

স্ব-বিকাশ বা আত্মবিকাশের পথে এগিয়ে চলাই হলো স্বধর্ম বা মানবধর্ম। এই মানবধর্মই "মহাধর্ম"। কোনো প্রচলিত আরোপিত ধর্মকে স্বধর্ম ভেবে ভুল করোনা।
কিভাবে শুরু করবে :
"মহাধর্ম" গ্রন্থের মধ্যেই খুব সংক্ষিপ্তাকারে আত্মবিকাশের বা মনোবিকাশের শিক্ষাক্রম আছে। কয়েকজন সমমনষ্ক আগ্রহী মানুষকে নিয়, এই "মহামনন" আত্মবিকাশ শিক্ষাক্রমের অনুশীলন শুরু করতে হবে, নিজের এলাকায়। সপ্তাহে দু-তিন দিন, কমপক্ষে একদিন। নাম~ মহামনন আত্মবিকাশ কেন্দ্র।
'মহামনন' এর অর্থ হলো মহা চিন্তন। আত্মবিকাশের জন্য গভীরভাবে চিন্তন ও মনোবিকাশের চর্চাই হলো মহামনন।
স্বধর্ম অর্থাৎ মানবধর্মই হলো মহাধর্ম। তোমার স্বধর্ম হলো আত্মবিকাশের পথে এগিয়ে, যথেষ্ট বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার ধর্ম। কোনো আরোপিত প্রচলিত ধর্ম তোমার স্বধর্ম নয়।

ধর্মের ঘেরাটোপের মধ্যে থেকে ধর্মকে পরিশুদ্ধ করে তোলার অনেক চেষ্টা হয়েছে। সফল হয়নি। হবেও না কখনও।

ধর্ম, জগত, সংসার, মানবজীবনের আসল রূপটা দেখতে হলে, ধর্মের ঘেরাটোপের অন্ধকুপ থেকে বেড়িয়ে এসে, মুক্ত মন নিয়ে দেখতে হবে জগতটাকে।

কোনো ধর্মগুরু, শাস্ত্র, গ্রন্থ, কোনো মনীষীর দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে, তাঁদের উক্তির উপর নির্ভর না করে বিশ্বাসের রঙিন চশমাটাকে খুলে রেখে, নিজস্ব উপলব্ধিকে, সত্যকে দেখা ও জানার ক্ষমতাকে জাগ্রত করে তুলতে হবে। তাহলেই আমাদের জীবনটা বদলে যাবে। তখন ঈশ্বর ও জগত-সংসার তার স্বরূপে (প্রকৃত রূপে) ধরা দেবে আমাদের কাছে ।  ~মহর্ষি মহামানস

মানবসমাজ হলো একটা শরীরের মতো। আর, এই শরীরে— জ্ঞান ও চেতনায় পিছিয়ে পড়া— অনগ্রসর মানুষ হলো দুষিত ক্ষত অথবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত অংশের মতো।প্রকৃত মানববিকাশসহ দেশের সামগ্রিক বিকাশ ঘটাতে চাইলে, সুস্থ-সমৃদ্ধ অপরাধ-অশান্তি মুক্ত দেশ গড়তে চাইলে, এদের উপেক্ষা বা ঘৃণা করে নয়, হিংসা-বিদ্বেষ দমন-পীড়নের মাধ্যমে নয়, এদের কিছু পাইয়ে দিয়ে লাভবান হওয়ার রাজনীতি করে নয়, একমাত্র আত্মবিকাশ বা মনোবিকাশমূলক শিক্ষাসহ সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই এই ক্ষত নিরাময় করতে হবে। ~মহর্ষি মহামানস
mmm.jpg
ma.jpg
মানুষ তার আত্মবিকাশ মুখি স্বভাব ধর্ম থেকে বিচ‍্যুত হয়ে, বিপথগামী হয়ে পড়েছে। তাকে তার স্বধর্মে ফিরিয়ে আনতেই হাজির এই মহাধর্ম।
ঈশ্বর বা বিশ্বাত্মার স্বধর্ম বা স্বভাব ধর্ম হলো 
আত্মবিকাশের পথে এগিয়ে চলা। সে-ই হলো মহাধর্ম। মানুষ তার এই স্বভাব ধর্ম থেকে বিচ‍্যুত হয়ে বিপথগামী হয়ে পড়েছে।
mmm.jpg
mm.jpg
maha.jpg
maa.jpg

পৃথিবীর কঠিন অসুখ~ গভীর সঙ্কট!

একদিকে, পৃথিবী তার অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার মতো গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। অপরদিকে, সমগ্র মানবজাতি ভুগছে দুরারোগ্য কঠিন ব‍্যাধিতে। মানবজাতিসহ এই পৃথিবী ধ্বংসোন্মুখ অবনতির দিকে এগিয়ে চলেছে ক্রমশ।

সবচাইতে বড় সমস্যা হলো, অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই তা' বোঝার মত যথেষ্ট বোধশক্তি বা চেতনা নেই। প্রচলিত ধর্ম-- রাজনীতি, প্রশাসন-প্রতিরক্ষা, বিজ্ঞান-- দর্শন, নাস্তিক্যবাদ--- কোন কিছুই এর সমাধানে সক্ষম নয়।

যদিও আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই আর, তবুও, শেষরক্ষা পেতে, একমাত্র ভরসা হলো~ 'মানবধর্ম'। পুনরায় মানবধর্মে ফিরে এসে, ঘরে ঘরে মনোবিকাশের ধর্ম~ মানবধর্ম অনুশীলনের মধ্য দিয়ে--- মানুষের চেতনার যথেষ্ট বিকাশ ঘটলে, তবেই মানুষ এই আত্মবিনাশক কঠিন অসুখ থেকে মুক্ত হতে সক্ষম হবে।

মানুষের ব‍্যাধিটা কত কঠিন ও জটিল এবার একটু দেখে নেওয়া যাক: যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনার অভাব থেকে উৎপন্ন হওয়া অন্ধত্ব ---অন্ধবিশ্বাস, আর তার সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক কঠিন অসুস্থতা মিলিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে এই কঠিন দুরারোগ্য ব্যাধি।

মানুষের মূল সম্পদ হলো তার চেতনা আর সুস্থতা। চেতনার অভাবে জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। মানুষ সুস্থতা ও চেতনা রহিত হলেই তার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। অথচ তার এতটুকু হুঁশ নেই! হাসি-মজা, গল্প-আড্ডা, আর যেনতেন প্রকারে তার হীন-স্বার্থ চরিতার্থ করা নিয়েই মশগুল হয়ে আছে সে!

অন্ধত্ব ---অন্ধবিশ্বাস মানুষের চেতনা বিকাশের পক্ষে সবচাইতে বড় অন্তরায়। তাকে আরো পরিপুষ্ট করে তুলেছে একশ্রেণীর কুচক্রী প্ররতারকদের তৈরি 'ধর্ম' নামক শোষণ ও নিপীড়ন যন্ত্রটি। এই ধর্ম নামক অধর্মের বিষে জর্জরিত হয়ে, মোহাচ্ছন্ন হয়ে, নেশাসক্তের মতো মানুষ মিথ্যে প্রলোভনের পিছনে ছুটে মরছে হাজার হাজার বছর ধরে।

তারপর, তার এই বোধশক্তি ও জ্ঞানের অভাবেই সে অনিয়ম, অনাচার, কদাচার, অখাদ্য আহার অপচিকিৎসাসহ সিফিলিস-গনোরিয়ার মতো বংশপরম্পরায় সংক্রামিত হওয়া বিভিন্ন অনারোগ‍্য কঠিন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে, এবং একে অপরকে আক্রান্ত করে চলেছে ক্রমশ। এই সমস্ত রোগ-ব‍্যাধি মানুষের মস্তিষ্ককে জড়বৎ করে তুলে--- মানুষকে তার স্বাভাবিক চেতনা বিকাশে অক্ষম করে তুলেছে। আর সেই সঙ্গে মানুষকে করে তুলেছে প্রচণ্ড ক্রোধান্ধ এবং উগ্র কামোন্মাদ। উগ্র কামোন্মাদনা মানবজাতির অন‍্যতম এক বড় সমস্যা। আবার এই কামোন্মাদনা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে, মানসিক বিকার-বিকৃতি, মনোরোগ, উন্মাদনা ও ধর্মোন্মাদনা। পৃথিবীতে সুস্থ মানুষের দেখা মেলাই ভার হয়ে উঠেছে আজ।

~মহর্ষি মহামানস

অনাচারী কদাচারী ভন্ড গুরুদের কাছে তদ্রূপ ভক্তরাই গিয়ে জড়ো হয়! যে যেমন প্রকৃতির সে তেমন সঙ্গই তো কামনা করে থাকে!
~মহর্ষি মহামানস

আমার এখানে 'বিশ্বাস' কথাটির কোনো স্থান নেই। আছে, 'জানি' অথবা 'জানিনা'। তবে ব‍্যবহারিক প্রয়োজনে, 'আপাত সত্য' বা 'আপাত বিশ্বাস' -এর ব্যবহার করা যেতে পারে।

মহাবিশ্বরূপ ঈশ্বর (বিশ্বাত্মা) চায় আমরা পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে উঠি। সে  চায়না, আমরা তার ভজনা করে মানবজীবনের লক্ষ্য থেকে বিচ‍্যুত হয়ে বিপথগামী হই।
ব্যক্তি এককের বিকাশের মধ্য দিয়েই দেশের এবং সমগ্র মানবজাতির বিকাশ সম্ভব। আর সেই উদ্দেশ্যেই 'মহাধর্ম' ও 'মহামনন' কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মানুষ যেদিন অহংকার মুক্ত হয়ে বলতে পারবে, 'আমি যথেষ্ট বিকশিত মানুষ নই। আমাকে (বিকশিত) মানুষ হতে হবে।'
সেদিন থেকেই প্রকৃত মানববিকাশ শুরু হবে।
একজন মানবধর্মী হিন্দুও নয়, মুসলিমও নয়, তার একমাত্র পরিচয়, সে মানুষ।
একজন মহাধর্মী আস্তিকও নয়, নাস্তিকও নয়। আত্ম-বিকাশের পথে, বিকাশমান চেতনা পথে, আপাত সত‍্যের হাত ধরে পূর্ণ সত‍্যের লক্ষ্যে এগিয়ে চলা একজন পথিক।
হিন্দু নয়, মুসলিম নয়, খ্রিস্টান নয়, নিজেকে মানুষ ভাবুন।আর নিজেকে বিশুদ্ধ ও বিকশিত মানুষ করে তুলুন। সেই বিশুদ্ধ মানবজাতিকে টিকিয়ে রাখতে, লড়াই করুণ।
আস্তিক আর নাস্তিক নিয়েই পড়ে আছো! কিন্তু এর বাইরেও যে জগৎ আছে তোমরা জাননা !
তোমরা জীবনের আসল পথই খোঁজো না !!

ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মূল কারণ হলো আমাদের জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতা। এই সত্য যতদিন না মানুষ বুঝতে পারবে, ততদিন ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থাকবে। ~মহর্ষি মহামানস

নাস্তিকতা প্রসঙ্গে
~মহর্ষি মহামানস

নাস্তিক‍তাও একটা বিশ্বাস। ঈশ্বরের অনস্তিত্বে বিশ্বাস। কোনো কোনো নাস্তিক অন্য কোনো দর্শন বা তত্ত্ব বা মতবাদে দৃঢ় বিশ্বাসী হওয়ার কারণেও, ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হতে পারে।

যদি কেউ যুক্তিপথে বিচার ক'রে, 'ঈশ্বর নেই'~এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, সেক্ষেত্রেও তার যুক্তি- বিচারে ফাঁক ফোঁকোর থেকে যেতে পারে। তাই প্রকৃত বিজ্ঞানমনষ্ক যুক্তিবাদী কখনোই বলবে না যে সে নাস্তিক। সে বলে, আমি নাস্তিকও নই, আস্তিকও নই, আমি জ্ঞান পথের তথা বিকাশ পথের পথিক। ক্রমবিকাশমান চেতনার পথে এগিয়ে চলাই আমার কাজ।

বর্তমান মানব-চেতন স্তরে, যুক্তি হলো সত‍্যে পৌঁছনোর একটা উপায়। এর থেকে ভালো কোনো উপায় এই মূহুর্তে না থাকায়, আমরা যুক্তিপথেই সত‍্যে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করে থাকি। এই যুক্তিপথটাও একটা আপাতকালীন উপায় বা পথ।

মুক্তমনা প্রকৃত যুক্তিবাদী তার সব জানা, সব সিদ্ধান্তকেই আপাত সত‍্য জ্ঞান করে এগিয়ে চলতে থাকে। সে কখনোই শেষ কথা বলে না। এটা হতেই পারে না অথবা এটাই চিরসত‍্য, একথা সে বলতে পারে না। যে বলে, সে প্রকৃত যুক্তিবাদী নয়। যুক্তিবাদী বলে, আমি এটাকে আপাত সত‍্য হিসেবে জানি। তুমি যুক্তি প্রমাণ দিয়ে বোঝাতে পারলে, আমি বুঝতে প্রস্তুত।

প্রকৃত সত‍্যান্বেসী যুক্তিবাদী মানুষ কখনোই ঘোষণা করেনা, "আমি নাস্তিক"। আস্তিকতা ও নাস্তিকতা উভয়ই হলো বিশ্বাস ভিত্তিক ধারণা। বিকাশ পথের তথা জ্ঞান পথের পথিক, যে শুধু সত‍্যকেই চায়, বিশ্বাসের অজ্ঞান-অন্ধকার পথে পা বাড়ায় না, অথবা যে জানে সত্যটা কী, সে আস্তিকও নয় নাস্তিকও নয়। আপাত সত‍্যের হাত ধরে পূর্ণ সত‍্যের লক্ষ্যে এগিয়ে চলাই তার ধর্ম। সে আত্ম-বিকাশের পথে, বিকাশমান চেতনা পথে, আপাত সত‍্যের হাত ধরে পূর্ণ সত‍্যের লক্ষ্যে এগিয়ে চলা একজন পথিক।

মহাধর্ম
আস্তিক বা নাস্তিক রূপ কোনো অন্ধ বিশ্বাসীদের ধর্ম নয়। মহাধর্ম হলো খোলা মনের আত্ম-বিকাশকামী মানুষের ধর্ম। মানবধর্ম।
*নাস্তিকদের মধ্যে একটা অংশ অন্ধবিশ্বাসী
'মহাবাদ'-এর মূল কথা:
ব‍্যক্তি এককের মনোবিকাশের মধ্য দিয়েই সমগ্র মানবজাতির প্রকৃত বিকাশ সম্ভব হবে।
অন‍্য উপায়ে নয়।
প্রচলিত ধর্ম থেকে মুক্ত হয়ে মানবধর্মে স্থিত হতে, নাস্তিক-ই হতে (বিশ্বাত্মার অস্তিত্ব অস্বীকার করতে) হবে, এমন নয়।

~মহর্ষি মহামানস
শুধু ধর্মান্ধতা নয়, উগ্র কামোন্মাদনা ও কামান্ধতা মানবসমাজের এক বড় সমস্যা। এরজন্য দায়ী অজ্ঞানতা ও অসুস্থতা।

মানবজাতির বিকাশ ব্যক্তির সুস্থতা ও মনোবিকাশের উপর নির্ভরশীল। ব‍্যক্তির বিকাশ ঘটলে তবেই সমষ্টির বিকাশ ঘটবে। ব‍্যক্তি হলো মানবজাতির একক।  

~মহর্ষি মহামানস

এ' ধর্ম ত‍্যাগ করে ও ধর্মে যাওয়া সহজ।
কিন্তু মানবধর্মে আসা সহজ নয়।
যে এই কঠিন কাজটা করতে পারে সে-ই (বিকশিত) মানুষ।

 ~মহর্ষি মহামানস

জ্ঞান অর্জন করতে যথেষ্ট মানসিক পরিশ্রম করতে হয়, বিশ্বাস করতে নয়। তাই, মানসিক পরিশ্রম বিমুখ মানুষ বিশ্বাসের পথটাই বেছে নেয়।
~ মহর্ষি মহামানস
কোনো মতাদর্শে (সে সমাজতন্ত্র, নাস্তিক‍্যবাদ বা সাম‍্যবাদ যাইহোক না কেন) আপনার দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, আপনি মুক্তমনা নন।

'মহাবাদ' সমস্যার মূল থেকে সমাধান করে। অন‍্যান‍্য মতবাদের মতো মানুষের উপর কোনো সিস্টেম চাপিয়ে দিয়ে মূল সমস্যাকে ধামাচাপা দেয়না।

'মহাবাদ'-এর মনোবিকাশের পথ ধরেই মানবসমাজে শুভ পরিবর্তন আসবে।
~মহর্ষি মহামানস

“তুমি একজন মানুষ রূপে জন্ম গ্রহন করেছ, তাই তোমার জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হলো— পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠা। জীবনের লক্ষ্যসহ— নিজেকে এবং এই জাগতিক ব্যবস্থাকে জানতে, সর্বদা সজাগ—সচেতন থাকতে চেষ্টা কর। নিজেকে প্রকৃত ও সর্বাঙ্গীন বিকশিত মানুষ ক’রে তুলতে উদ্যোগী হও।”
~মহর্ষি মহামানস

"নিজে বাঁচো অপরকে বাঁচাও, আর নিজের বিকাশ ঘটানোর সাথে সাথে অন‍্যান‍্যদেরও বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করো। এটাই হলো মানবধর্ম।" ~মহর্ষি মহামানস

“তোমার একটি সচেতন মন আছে বলেই— তুমি মানুষ। তবে তোমার এই (সচেতন) মনটি এখনও যথেষ্ট বিকশিত নয়। যথেষ্ট বিকশিত একজন মানুষ হয়ে উঠতে— তোমার এই মনটির বিকাশ ঘটানো আবশ্যক। আর এটাই তোমার প্রাথমিক ধর্ম।”
~মহর্ষি মহামানস

যে পথ ও পদ্ধতিকে ধারণ ক’রে একজন মানুষ নিজেকে— নিজের স্বরূপে উপলব্ধি করতে পারে, আরো ভালো জীবন লাভে সক্ষম হতে পারে, এবং পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে দ্রুত অগ্রসর হতে পারে, তা’ই হলো— ‘মহাধর্ম’।

~মহর্ষি মহামানস

শিশুসুলভ মানবমন রূপকথাসম ধর্মীয় কল্পকাহিনীতে কেমন অন্ধবিশ্বাসে বিভোর হয়ে আছে! একবারও প্রশ্ন জাগেনা এই মনে!
আজকের অনেক শিশু মনেও প্রশ্ন জাগে, তারাও প্রশ্ন করে, তবুও নিজেদেরকে বয়স্ক ভেবে গর্বিত মনে প্রশ্ন জাগে না, তাইতো, এসব কি সম্ভব! এগুলো কি অবাস্তব কল্পনা নয়!?

মানবতা বা মানবত্ব
~মহর্ষি মহামানস

মানবতা-কে বুঝতে হলে, সবার আগে আমাদের মনকে জানতে হবে, সঠিকভাবে। কারণ, মানবতা হলো মানবমনের স্বভাব-গুণ বা স্বভাব-ধর্ম।

জাতি ধর্ম শ্রেণী দেশ নির্বিশেষে যেকোনো এক বা একাধিক মানুষের দুঃখ-কষ্ট বা সমস্যায় সমব‍্যাথি হয়ে বা সহানুভূতিশীল হয়ে, নিঃশর্তভাবে বা অনাপেক্ষিকভাবে এবং (আপাতদৃষ্টিতে) নিঃস্বার্থভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াকেই বলা হয় মানবতা।

এই মানবতার পিছনে রয়েছে মানুষের সঙ্গে একাত্ববোধ জনিত স্বতস্ফূর্ত এক সমবেদনা বোধ।

সচেতন মনের যথেষ্ট বিকাশ ছাড়াও, অন্ধ-আবেগ প্রবণ বৈপরীত্য সম্পন্ন আদিম-মানবমন~ অবচেতন মনের আবেগ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতেও কখনো কখনো এই মানবতার প্রকাশ ঘটতে পারে। তবে অস্থির যুক্তিবিহীন অবচেতন মনের এই মানবতা সবসময় সবক্ষেত্রে সমানভাবে কার্যকর নাও হতে পারে।

যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনা লাভের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বিকশিত সচেতন মানব মন, প্রকৃত মানবত্ব লাভে সক্ষম হয়ে থাকে। সেই যথেষ্ট বিকশিত মনের মানুষের মধ্যে যে মানবতার প্রকাশ ঘটে, সে-ই হলো প্রকৃত ও স্থায়ী মানবিকতা।

সচেতন মানবিক মন অন্ধবিশ্বাস ও অন্ধ-আবেগের দ্বারা পরিচালিত হয়না, সে সজ্ঞানে সচেতনভাবে, যুক্তিপথে অপরাপর মানুষের স্বার্থকে নিজের স্বার্থ জ্ঞান করে, তাদের দুঃখ-কষ্ট সমস্যায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। আর, প্রধানত সে সাহায্য করে থাকে সমস্যার মূল উৎপাটনের ক্ষেত্রে। অবচেতন মনের মতো সমস্যাকে অবদমিত করে রাখা, ওপরে ওপরে সাহায্য সে সাধারণত করেনা।

bottom of page