top of page

মহাধর্ম : সারকথা

 

 

আজ আমি আপনাদেরকে মানব-ধর্ম ভিত্তিক আত্ম-বিকাশমূলক যুগোপযোগী ধর্ম— মহাধর্ম-এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রয়াসি হয়েছি।

মহাধর্ম হলো আসলে মানব ধর্ম। আমাদের মূলগত— প্রাথমিক ধর্ম। আত্ম-বিকাশ তথা মানব-বিকাশের জন্য অনুশীলনীয় ধর্ম। শ্রেষ্ঠতর জীবনলাভের নিশ্চিত উপায়।

সারকথা— “তোমার একটি সচেতন মন আছে বলেই— তুমি মানুষ। তবে তোমার এই মনটি এখনও যথেষ্ট বিকশিত নয়। যথেষ্ট বিকশিত একজন মানুষ হয়ে উঠতে— তোমার এই মনটির বিকাশ ঘটানো আবশ্যক। আর এটাই তোমার প্রাথমিক ধর্ম।”

“তুমি একজন মানুষ রূপে জন্ম গ্রহন করেছ, তাই তোমার জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হলো— পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠা। জীবনের লক্ষ্যসহ— নিজেকে এবং এই জাগতিক ব্যবস্থাকে জানতে, সর্বদা সজাগ—সচেতন থাকতে চেষ্টা কর। নিজেকে প্রকৃত ও সর্বাঙ্গীন বিকশিত মানুষ ক’রে তুলতে উদ্যোগী হও।”

“জন্মসূত্রে বা ইচ্ছাক্রমে তুমি যে ধর্মেরই অন্তর্ভুক্ত হওনা কেন, তোমার প্রথম পরিচয়— তুমি একজন মানুষ। একজন মানুষ হিসাবে, তোমার প্রধান ও মৌলিক ধর্মই হলো— মানব-ধর্ম। আর এই মানব ধর্ম-ই মহাধর্ম। সর্বাঙ্গীন সুস্থতা সহ মানবমনের বিকাশ সাধনই যার মূল কথা।”  

“আমরা এখানে এসেছি— এক শিক্ষামূলক ভ্রমনে। ক্রমশ উচ্চ থেকে আরো উচ্চ চেতনা লাভই— এই মানব জীবনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য। একানে আমরা জ্ঞান—অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে যত বেশি চেতনা-সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারবো, —তত বেশি লাভবান হবো। আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে— এখান থেকে চলে যাবার সময় কিছুই আমাদের সঙ্গে যাবে না, —একমাত্র চেতনা ব্যতিত।” —মহামানস

সর্বপ্রথম আমাদের বুঝতে হবে— এই মহাধর্ম আসলে কী। মহাধর্ম হলো—   মানবধর্ম, আমাদের মৌলিক ধর্ম— মানুষ গড়ার ধর্ম। এই ধর্ম প্রচলিত কোনো ধর্ম বা রিলিজিয়নের সাথে তুলনীয় নিয়। ঈশ্বর ও বিশ্বাস এই ধর্মের মূল ভিত্তি নয়। এর ভিত্তি হলো— যুক্তি-বিজ্ঞান ও অধ্যাত্ম বিজ্ঞান। মহাধর্ম প্রচলিত ধর্মগুলি থেকে সম্পূর্ণতঃ ভিন্ন।

সঠিক আত্ম-বিকাশ শিক্ষাক্রম— ‘মহামনন’-এর (মহামনন হলো মহাধর্ম-এর ব্যবহারিক দিক) পথ ধরে প্রকৃত আত্মোন্নয়ন ও মানবোন্নয়ন ঘটানোই হলো— আমাদের প্রাথমিক বা মূলগত ধর্ম। চিরিন্তন মানবধর্মকে কেন্দ্র ক'রে গড়ে ওঠা— মহাধর্মকে আপাতদৃষ্টিতে একটি নতুন ধর্ম মনে হলেও, এটা কোনো নতুন ধর্ম নয়। এ’ হলো আমাদের শাশ্বত ধর্ম। আমাদের অজ্ঞানতার কারণে যা এতকাল ছিলো অন্তরালে। আত্ম-বিস্মৃত মানুষ আমরা আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্যকে বিস্মৃত হয়ে, মোহ-আবেশে আচ্ছন্ন হয়ে— একটা ঘোরের মধ্যে বাস করছি।

যে ধর্ম অনুশীলনের মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি সজাগ-সচেতনভাবে দ্রুত পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার পথে অগ্রসর হতে পারে, তাই হলো মহাধর্ম (পড়ুন— 'মানবধর্ম আসলে কী')। 

ব্যক্তি মানুষের বিকাশের মধ্য দিয়েই দেশের এবং মানবজাতির বিকাশ সম্ভব। আর সেই উদ্দেশেই মহাধর্ম কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একে সফল ক’রে তুলতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন, এবং সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করুন। আপনি আপনার এলাকাতেই মহাধর্ম কার্যক্রম শুরু করতে পারেন। শুধু প্রয়োজন– আত্মনিবেদন, মহা-উদ্যোগ, সাংগঠনিক ক্ষমতা আর উপযুক্ত স্থান।

আপনার জীবনের প্রাথমিক চাহিদা— শরীর-মনের সুস্থতা, শান্তি, সমৃদ্ধি ও বিকাশলাভ করতে, মহাধর্ম (মানবধর্ম) অনুশীলন করুন। মহাধর্ম ক্রমশ এক মহা বৈপ্লবিক উত্তাল তরঙ্গে পরিণত হতে চলেছে। জীবনে আমূল শুভ-পরিবর্তন আসতে চলেছে— মহাধর্ম-এর পথ ধরে। একে ত্বরান্বিত ক’রে তুলতে আপনিও শরিক হোন।  

সমস্যা— তার মূল কারণ ও সমাধানঃ সমস্ত অমানবিক—ধ্বংসাত্মক—নিষ্ঠুর কার্যকলাপের জন্য দায়ী— মানুষের অজ্ঞানতা বা জ্ঞানের স্বল্পতা, আর অসুস্থতা— অস্বাভাবিকতা বা বিকৃত মানসিকতা। সারা পৃথিবীব্যাপী প্রতিনিয়ত হিংসা-বিদ্বেষ, নিপীড়ন-নির্যাতন-অত্যাচার-নিষ্ঠুরতা, ধর্ষন, প্রতারণা, হত্যা— ধ্বংস প্রভৃতি অসংখ্য অমানবিক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে চলেছে। এ’সবের জন্য একমাত্র দায়ী হলো— মানুষের যথেষ্ট চেতনারহিত অজ্ঞান ও অসুস্থ মন।

প্রচলিত ধর্মগুলির সাথে মহাধর্মকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। মহাধর্ম হলো আমাদের প্রাথমিক ধর্ম— মৌলিক ধর্ম— মানবধর্ম। সর্বাঙ্গীন সুস্থতাসহ মনোবিকাশের পথে এগিয়ে চলাই এই ধর্মের মূল কথা।   

bottom of page