সংগীতের মাধ্যমে 'মহামানস' ধ্যান
- mahadharma
- Jan 28, 2021
- 5 min read
Updated: Feb 1, 2021
সংগীতের মাধ্যমে 'মহা্মানস' ধ্যান
'সঙ্গীত সহযোগে ধ্যান' হলো একটা খুব সহজ এবং ফলপ্রসূ ধ্যান পদ্ধতি। প্রথমে গানটি কাগজে লিখে নাও। তারপর--- আমার সঙ্গে অথবা রেকর্ডের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গানটিকে কণ্ঠস্থ করে নাও। তারপর নিজেই গাইতে থাকো। কয়েকজন মিলে সংঘবদ্ধ হয়েও, এই ধ্যান অভ্যাস করতে পারো। ধ্যান-সংগীত গাওয়ার সময় হেলেদুলে--- মাথা দুলিয়ে, হাত তুলে, অথবা হাতে তালি দিয়ে--- মাতোয়ারা হয়ে গান গাইতে থাকো।
গানটি কে বারবার (repeatedly) গাওয়ার সাথে সাথে--- ক্রমশ লয় বা গতি বাড়িয়ে দাও। অর্থাৎ ক্রমশ দ্রুতগতিতে গান গাইতে থাকো। কিছুক্ষণ গাওয়ার পরে, যখন দেখবে বেশ ঘোরলাগা মতো অবস্থা হয়ে এসেছে, তখন গান গাওয়া বন্ধ করে চোখ বুঁজে স্ব-বোধে স্থিত হয়ে, ধ্যানের গভীরে ডুবে যাও। সমস্ত ফোকাস থাকবে মস্তিষ্কের ঠিক মাঝখানে। আস্তে আস্তে এক চিন্তাশূন্য অবস্থায় চলে যাও তুমি। যতক্ষণ ভালো লাগবে ধানের মধ্যে ডুবে থাকো।
এর বহুবিস্তৃত সুফল বর্ণনা করার প্রয়োজন নেই। নিষ্ঠার সঙ্গে ধ্যান অভ্যাস করতে করতে, ধ্যান-যোগী নিজেই উপলব্ধি করতে পারবে এর বহুবিধ উপকারিতা।
।। মহামনন আত্মবিকাশ সঙ্গীত ।।
~মহর্ষি মহামানস
জাগো ওঠো--- জাগো ওঠো, জাগো মোহ মুক্ত হও।
জাগো মন--- হও সচেতন, এখনো কেনো ঘুমাও।
জানো চেনো বোঝো নিজেরে, দ্রুত বিকশিত হয়।।
জাগো ওঠো--- অন্তরামি, জাগ্রত সক্রিয় হও।
স্ব-বোধে স্থিত হয়ে, 'মহামনন' যুক্ত হও।।
বিকাশমান চেতনা পথে, সচেতন হয়ে এগিয়ে যাও।
আর যা-ই হওনা তুমি, সবার আগে মানুষ হও।।
জাগো ওঠো--- হে মহাপথিক, সর্বাঙ্গীণ সুস্থ হও।
মানবধর্মের পথ ধরে তুমি স্ব-নিয়ন্ত্রণাধীন হও।।
।। মহামনন ।। স্ব-অভিভাভন গীতি
~মহর্ষি মহামানস
আমি জাগ্রত- আমি সক্রিয়, আমি সচেতন মোহমুক্ত।
আমি নির্মল--- পবিত্র, আমি সুন্দর--- আমি সুস্থ।।
আমি কে তা' আমি জানি, আমি সত্যানুসন্ধানী।
আমি দীপ্ত--- বিকশিত, আমি সকল বাঁধন মুক্ত।।
আমি পূর্ণ-- আমি স্বাধীন, আমি স্ব-নিয়ন্ত্রণাধীন।
আমি নিজেরে হারায়ে খুঁজি, আমি জেনেছি সৃষ্টিতত্ত্ব।।
(আমি) প্রশান্ত-- সন্তুষ্ট, নই কখনোই আমি রুষ্ট।
নেই অজ্ঞান-অন্ধত্ব, আমি প্রজ্ঞান-আলোক প্রাপ্ত।।
*গান-দুটি খাতায় লিখে নাও। অন্যান্য গানের জন্য যোগাযোগ করুন।
আরও গান---
মহাধর্মের গান
ওরে অবুঝ মন—
মানব ধর্মই মহাধর্ম— আত্ম-বিকাশ লাভে ব্রতী হও, মানুষ রূপে জন্মেছ— তাই, সবার আগে মানুষ হও। পূর্ণ বিকশিত মানুষ হও।।
আমরা সবাই একই পথের পথিক, ক্রম বিকাশমান চেতনার পথে— আমরা আছিতো ঠিক? মানবদেহ ধারণ করলেই, হয়না মানুষ ভাই— মানবত্ব লাভ করতে— মানব ধর্ম ছাড়া গতি নাই। মনোবিকাশের পথ ভুলে কেন— মোহ-আবেশে আবদ্ধ রও? মানুষ রূপে...
অজ্ঞানতাই সব অশান্তির মূলে— শান্তি খুঁজিস মিছেইরে তুই আসল কথা ভুলে। মানুষ আত্ম-জ্ঞানেই হয়রে স্বাধীন, বিকাশ-পথেই আসবে সুদিন— অজ্ঞান-অন্ধত্ব থেকে যত পারো মুক্ত হও। বিশ্বে শান্তি স্থাপন করতে— মহাধর্মের শরণ নাও।। মানুষ রূপে...
মানবধর্মের গান
ভোলা মন---
মানুষ রূপে জন্ম নিয়ে, কেন মানুষ হওয়ার কথা যাস ভুলে--- মানবধর্মে দীক্ষা নিয়ে, চল মানুষ গড়ার ইস্কুলে। মহাধর্মের ইস্কুলে।।
মানুষ হওয়ার মানে--- পূর্ণ বিকশিত মানুষ হওয়া। মানুষ হওয়ার মানে--- আত্ম-জ্ঞান-উপলব্ধি হওয়া। চাই মানব মনের বিকাশ সাধন, একথা ভুলিসনারে মন। সব প্রাসাদই লুটিয়ে পড়ে--- তার বনেদ গড়া না হলে। মানব ধর্মে....
সংলাপ: আমরা আমদের স্বভাব ধর্ম--- মানবধর্ম নিয়েই জন্মগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু এই কুটিল-স্বার্থান্বেষী সমাজ-সংসার আমাদেরকে মানবধর্মের স্বতঃস্ফূর্ত আত্মবিকাশ তথা মানব-বিকাশের স্বাভাবিক পথ থেকে পথভ্রষ্ট করে, আমাদের উপর কৃত্রিম ধর্ম--- অধর্ম চাপিয়ে দিয়েছে। আর তারফলেই আজ আমাদের এত দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা। অনেক দেরী হয়ে গেলেও, এখনো সময় আছে। এখন, পুনরায় আমাদের মৌলিক ধর্ম--- মানবধর্মে ফিরে আসতে হবে, মহাধর্মের পথ ধরে। মানবধর্মই মহাধর্ম। মানবধর্মের মূর্ত রূপই হলো~ মহাধর্ম।
একটি সচেতন মন আছে বলেইনা তুমি আজ মানুষ হলে---। সবার কাছে জহির করো নিজেকে তাই মানুষ বলে। কিন্তু তোমার সেই সচেতন মন--- সেতো নয় যথেষ্ট চেতন। বিকাশ ঘটাতে হবে যে তার মানবত্ব লাভ করতে হলে।
মানুষ হওয়ার মানে--- অজ্ঞান অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া। মানুষ হওয়ার মানে হলো--- মন কুসুমের বিকাশ হওয়া। মানুষ আত্মজ্ঞানেই হয়রে স্বাধীন, বিকাশ পথেই আসবে সুদিন। ভ্রমে মন, আর কতদিন করবি ভ্রমন আত্ম-বিকাশ লাভের পথ ভুলে---। মানব ধর্মে....
মহা বাউল সংগীত
মানুষ হয়ে জন্মেছো, তাই--- সবার আগে মানুষ হও। মানুষের মতো মানুষ হও, পরিপূর্ণ মানুষ হও।। সংলাপ: একজন মানুষ, জন্মসূত্রে অথবা ইচ্ছাক্রমে, সে--- যে ধর্মেরই অন্তর্ভুক্ত হোক না কেন, একজন মানুষ হিসেবে, তার প্রথম ও প্রধান ধর্মই হলো মানব ধর্ম। এই মানব ধর্মই হলো--- মহাধর্ম। তাই, আর যা-ই হতে চাও না কেন, সবার আগে মানুষ হও। পূর্ণ বিকশিত মানুষ হও।। সংলাপ: আমরা মানুষ হয়ে জন্মেছি, পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে ওঠাই আমাদের জীবনের প্রধান লক্ষ্য। প্রকৃত সুখী যদি হতে চাও, দুর্ভোগ যদি না চাও, যদি সুস্থ জীবন পেতে চাও, অশান্তি যদি না চাও, জীবনে সফল যদি হতে চাও, অজ্ঞান-অন্ধত্ব যদি না চাও,
তাহলে, জাগো ওঠো--- জাগো ওঠো, পূর্ণবিকশিত মানুষ হও। মানব মনের বিকাশ ঘটাও, মানুষের মত মানুষ হও। মহামননের পথ ধরে মহা আনন্দে এগিয়ে যাও। মহাধর্মের পথ ধরে--- মানুষ হও মানুষ হও। সংলাপ: একটি সচেতন মন আছে বলেই না, তুমি মানুষ। কিন্তু তোমার সেই মনটি যে এখনো যথেষ্ট বিকশিত নয়। তাই, পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে উঠতে হলে, তোমার ঐ মনটির বিকাশ ঘটাতে হবে সবার আগে। এটাই তোমার প্রাথমিক ধর্ম ও কর্ম। এটাই মানবধর্ম--- এটাই মহাধর্ম।।
মানব ধর্ম সঙ্গীত
মানব ধর্মই মহাধর্ম, বিকাশ পথেই হবে জয়, বলো, মানব ধর্মের জয়--- জয়, বলো মহাধর্মের জয়। আত্ম বিকাশের পথেই হবে যে--- দুঃখ মোচন নিশ্চয়। বল মানব ধর্মের জয়... মহামননের পথ ধরলে, মানবজাতির হবে জয়। বল, মানব ধর্মের জয়... মহাবাদের শরণ নিলে--- নেই কোন আর ভয়। বল মানব ধর্মের জয়... মহাধর্ম অনুসরণ করলে, ভব যন্ত্রণার হবে ক্ষয়। বল মানব ধর্মের জয়... মানব ধর্ম পালন করলে, কাটবে যে দুঃসময়। বল মানব ধর্মের জয়.... মহামানসের পথে চলো যাই--- হয়ে আজ নিঃসংশয়। বল মানব ধর্মের জয়....
মহাজীবন নদীর গান
ও নদীরে---
মহা জীবন নদীরে---
তোর ঢেউয়ের ওঠা-পড়া।
কেউ আকাশ ছুঁতে চায়,
কেউ মাটিতে আছড়ায়,
অসংখ্য প্রাণের ইশারা।
তোর ঢেউয়ের ওঠা-পড়া....
স্রোত আর হাওয়াতে--- উছলে উঠে,
ঢেউ হয়ে জন্মায়,
বীরদর্পে ধেয়ে যায়।
ক্ষনিকের তরে--- আস্ফালন করে,
জানে না তো হায়,
সে কত অসহায়।
অংশকে সম্পূর্ণ ভেবে,
হয় যে দিশেহারা---।
তোর ঢেউয়ের ওঠা-পড়া....
অন্ধ আবেগে--- ছুটে যায় বেগে,
আসা-যাওয়ার পালায়,
দোলে সুখ-দুঃখের দোলায়।
আশা নিরাশা--- ভালোবাসা---
মায়াময় রঙের মেলায়,
ঢেউ মেতে ওঠে খেলায়।
একের পর এক আঘাত আসে,
তবুও আত্মহারা।
তোর ঢেউয়ের ওঠাপড়া....
বিকাশ লাভের গান
মানুষরূপে জন্ম নিলাম
এই ধরণীর বুকে।
মানবধর্মে দীক্ষা নিয়ে---
পূর্ণ বিকাশ লাভের লক্ষ্যে চেয়ে---
আমার যাত্রা শুরু হলো---
জানতে আমাকে।
এই ধরণীর বুকে....
নিজেকে জানার সাথে---
নিজের কর্তব্য কী জনলাম আমি
তোমাদের কাছ হতে।
মহা স্রোতে মিশে যেতে,
তোমারা ডাকলে আমাকে।
এই ধরণীর বুকে....
(ব্যক্তির) বিকাশ লাভের মধ্য দিয়েই
ঘটে মানবজাতির বিকাশ,
সচেতন হয়ে--- সচেষ্ট হয়ে,
তাই ঘটাও আত্মবিকাশ।
কেবল ভাবি মনে,
বিস্মৃত না হই মানবধর্ম
চলার পথে নেমে---
না যাই আমি থেমে।
দিশেহারা থেমে যে জন,
(যেন) ডাক দিয়ে নিই তাকে।
এই ধরণীর বুকে...
যত ভোগ হয় তত যোগ হয়
যত ভোগ হয়--- তত যোগ হয় যত ভোগান্তি--- ততই শান্তি, ভোগান্ত হলে শান্ত যে রয়। যত ভোগ হয়.... সুখ ভোগ চাই--- দুর্ভোগ তাই, এমনি করেই আমরা সবাই--- ছুটে যাই, আরো জোরে ছুটে যাই, কি আছে--- আরো কি আছে, তাই জানতে। সব ভোগাভোগের অন্তে।। ভোগের দ্বারাই যোগাযোগ তার সাথে, ভুক্তভোগীই জানে কেবল কি আছে রে তাতে। ভোগ ছাড়া যোগী, যোগ ছাড়া ত্যাগী--- কখনোই সেতো হবার নয়।। যত ভোগ হয়..... জ্ঞানী ভোগ করে সচেতনভাবে অজ্ঞানী--- অন্ধ আবেগে। রিপুর তাড়নায় ছুটে মরে সে, কামনা-বাসনা মেটাতে। তবুও তৃপ্ত হয় না সে তাতে। এমনি করেই এগিয়ে যেতে হবে, 'যাব না' এ' কথা বলা, চলবে না এই ভবে। রোগ ছাড়া প্রাণী--- ভোগ ছাড়া জ্ঞানী, কখনোই যে তা' হবার নয়।। যত ভোগ হয়.......
সময়ের গান
সময়--- সময়--- সময়--- সময়ের তালে বাঁধা যে আমরা কেউ কম বেশি নয়। সময়--- সময়.... সময় মতোই এসেছি--- সময় হলে যাবো, কাজের সময় কাজ করেছি, সময়েই ফল পাব। সময়ের চাকায় বাঁধা সবই হেথা নেই কোন অসময়। সময়---সময়... গ্রহ-তারা হতে ধূলিকণা গুলি--- সময়ের তালে চলে--- জেনে শুনেও তবু আমরা বলি, কেন অসময়ে এলে---। দুঃখের সময় দুঃখ এসেছে--- সময় হলেই যাবে। সময় দান সুখ-দুখ, একে অপরের অভাবে। কোনো কারণ ছাড়া এখানে কোন কিছু নাহি হয়। সময়--- সময়....
জাগরণের গান
মানবধর্মই মহাধর্ম---
(পূর্ণ) মানুষ গড়াই লক্ষ্য যে তার,
মানুষ হওয়ার ডাক দিয়েছেন
মহামানস যে এবার।
যে দুটি মন আছে মনোজগত সংসা্রে,
স্বামী-স্ত্রীর মতোই তারা সংসার করে।
একটি হলো পাগলিনী মা-কালী যেমন,
আরেকটি তন্দ্রাচ্ছন্ন, ঠিক শিবেরই মতন।
এই শিবের মতো মনটিকে ভাই জাগাতে হবে এবার।
মানবধর্ম... ... ... লক্ষ্য তার।
আর কতো ঘুমাবিরে মন, জাগো--- ওঠো জাগো এবার।
মানুশ... ... ... মহামানস যে এবার।
আমরা মানুষ কেন ভাই!
মানব-চেতন মন আছে মোদের
যা আর কাহারো নাই।
সেই মনটাই তো নয় বিকশিত---
যথেষ্ট এখনো আমার।
তাই, মানুষ... ... ... মহামানস যে এবার।
যতকিছু গন্ডগোল এই জগত মাঝারে
অজ্ঞানতা---অসুস্থতাই তার কারণ শিকড়ে।
অন্ধ-আবেগী মন--- সব করে নিয়ন্ত্রণ,
সচেতন মনটি আজও নয় যথেষ্ট চেতন।
এই মানব-চেতন মনটিকে তাই জাগাতে হবে এবার।
মানুষ হওয়ার... ... মহামানস যে এবার।

Comments